বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণ ও এ রোগে মৃত্যুর সাপ্তাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘভিত্তিক প্রতিষ্ঠান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বুধবার প্রকাশিত সে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে তার আগের সপ্তাহের তুলনায় বিশ্বজুড়ে করোনায় মৃত্যুহার কমেছে ৯ শতাংশ, তবে সংক্রমণ পরিস্থিতি প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে।

ডব্লিউএইচওর প্রতিবেদনে বলা হয়—গত সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১৪ হাজার জনের, যা তার আগের সপ্তাহের চেয়ে ৯ শতাংশ কম। কিন্তু বিশ্বের কিছু অঞ্চলে দৈনিক সংক্রমণ হ্রাস ও কয়েকটি অঞ্চলে তা বৃদ্ধির ফলে সংক্রমণ পরিস্থিতিতে তেমন পরিবর্তন আসেনি।

যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, কানাডা ও দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশভূক্ত ১৪টি দেশ, মধ্যপ্রাচ্যে গত সপ্তাহে দৈনিক সংক্রমণ কমেছে ২০ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি উন্নতি হয়েছে আফ্রিকা অঞ্চলে। ৭ দিনে এ মহাদেশে দৈনিক সংক্রমণ ৪৬ শতাংশ কমেছে।

তবে একই সঙ্গে তা বেড়েছে প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিামাঞ্চলীয় বিভিন্ন দেশে। ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, গত ৭ দিনে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, কম্বোডিয়া, জাপান ও চীনে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ।

তবে মধ্যপ্রাচ্যে দৈনিক সংক্রমণ কমলেও বেড়েছে মৃত্যুহার। গত সপ্তাহে এশিয়ার এই অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে করোনায় ‍মৃত্যু হার ১৯ শতাংশ বেড়েছে। তবে একই সময়ে আফ্রিকায় ৭০ শতাংশ, ইউরোপে ১৫ শতাংশ এবং উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকায় ১০ শতাংশ কমেছে করোনায় মৃত্যুহার।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে বিশ্বের প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটিও ঘটেছিল চীনে।

তারপর অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

কিন্তু তাতেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় অবশেষে ওই বছরের ১১ মার্চ করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৫৯ কোটি ৯ লাখ ৯৭ হাজার ৬১৩ জন এবং এ রোগে মৃত্যু হয়েছে মোট ৬৪ লাখ ৪০ হাজার ৯৩৭ জনের।

এছাড়া গত আড়াই বছরে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন মোট ৫৬ কোটি ২৯ লাখ ৯ হাজার ৯৪ জন।