রাশিয়ার ক্রুড অয়েল (অপরিশোধিত জ্বালানি তেল) আমদানির পর দেশে এনে সেগুলো পরিশোধনের পর যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করছে ভারত। শুধু তাই নয়, উৎস লুকিয়ে ফেলতে পরিশোধিত তেল মাঝ-সমুদ্রে নিয়ে জাহাজে লোড করার পর সেগুলো নিউইয়র্কে পাঠানো হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ভারত এমন কৌশলে জ্বালানি তেল রপ্তানি করছে জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন।

শনিবার ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ একজন কর্মকর্তা ওয়াশিংটনের উদ্বেগের তথ্য জানিয়েছেন বলে খবর দিয়েছে রয়টার্স।

রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ডেপুটি গভর্নর মাইকেল পাত্র বলেছেন, মার্কিন রাজস্ব বিভাগ জানিয়েছে— ভারতীয় একটি জাহাজ গভীর সমুদ্রে রাশিয়ার ট্যাঙ্কার থেকে তেল নেওয়ার পর দেশটির পশ্চিমের উপকূলীয় রাজ্য গুজরাটের বন্দরে যায়। পরে সেখানে তেল পরিশোধনের পর আবারও জাহাজে তোলা হয়।

ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদযাপনের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, পরিশোধিত তেল সেই জাহাজে ফিরিয়ে নেওয়া হয় এবং নির্দিষ্ট কোনও গন্তব্য ছাড়াই সেটি যাত্রা শুরু করে। পরে মাঝ-সমুদ্রে এই জাহাজের গন্তব্য নির্ধারণ করা হয়। তখন সেটি গতিপথে ফিরে নিউইয়র্কে যায়।

গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আগ্রাসনের দায়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এর আওতায় রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল, পরিশোধিত জ্বালানি, কয়লা এবং গ্যাসসহ অন্যান্য জ্বালানি পণ্যের যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি নিষিদ্ধ রয়েছে।

তবে নয়াদিল্লিতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস এই বিষয়ে তাৎক্ষণিক মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের উদ্বেগের ব্যাপারে ভারতের কোনও কর্মকর্তা প্রকাশ্যে প্রথমবারের মতো এসব কথা বলেছেন।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি নয়াদিল্লি। এমনকি মস্কো তার প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলে আগ্রাসন শুরু করলেও ভারত নিন্দা জানায়নি।

মাইকেল পাত্র বলেন, তাকে বলা হয়েছিল রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল প্রক্রিয়াজাত করার পর একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক তৈরির জন্য ব্যবহৃত পাতনে রূপান্তরিত করা হয়েছে। তবে তিনি ভারতীয় সেই জাহাজ কিংবা শোধনাগারের পরিচয় প্রকাশ করেননি। তিনি বলেছেন, এক্ষত্রে তাই ঘটেছে যেভাবে যুদ্ধ কাজ করে। এটি অদ্ভুত উপায়ে কাজ করে।

বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক এবং ভোক্তা দেশ ভারত। দেশটি অতীতে খুব কমই রাশিয়ার তেল কিনেছিল। কিন্তু ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অনেক পশ্চিমা দেশ এবং কোম্পানির রাশিয়ার তেল ক্রয় বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে মূল্য ছাড় দেওয়ায় ভারতীয় তেল শোধনাগার কোম্পানিগুলো রাশিয়া তেলের আমদানি বৃদ্ধি করেছে।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস