প্রতীকী ছবি

স্কুলে থাকা অবস্থায় পানি পিপাসায় কাতর হয়ে পড়েছিল এক ছাত্র। কোনো পাত্র না পেয়ে বাধ্য হয়ে একপর্যায়ে সে লুকিয়ে একটি পাত্র থেকে পানি পান করে। আর এটিই যেন কাল হলো ওই শিক্ষার্থীর। কারণ যে পাত্র থেকে সে পানি পান করে তা ছিল শিক্ষকদের জন্য নির্ধারিত।

আর শিক্ষকদের জন্য নির্ধারিত ওই পাত্র থেকে পানি পানের অপরাধে দলিত সম্প্রদায়ের ওই শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করা হয়। আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে তার। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের রাজস্থান রাজ্যে।

রোববার (১৪ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। ইতোমধ্যেই অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।

পুলিশের সূত্র দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, গত ২০ জুলাই ভারতের রাজস্থান রাজ্যের জালোর জেলার সায়লা গ্রামের একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকদের জন্য রাখা পানির পাত্র থেকে পানি পানের অপরাধেই এক শিক্ষক ৯ বছর বয়সী ওই শিক্ষার্থীকে নির্মমভাবে মারধর করেন। মারধরে চোখ ও কানে গুরুতর আঘাত লাগে শিশুটির।

পরে তাকে চিকিৎসার জন্য ৩০০ কিলোমিটার দূরে আহমেদাবাদের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার মৃত্যু হয় ওই শিশু শিক্ষার্থীর।

ছোট্ট ওই ছেলের কী এমন অপরাধ ছিল তা জানতে চাইলে ওই দলিত শিক্ষার্থীর বাবা দেওয়ারান মেঘওয়াল বলেন, ‘নিজের পানির পাত্র থেকে পানি পানের অপরাধে চইল সিং নামক এক শিক্ষক আমার ছেলেকে নির্মমভাবে মারধর করে। তাকে এতোটাই গুরুতর ভাবে মারধর করা হয় যে শরীরে অনেকস্থানে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। পরে চিকিৎসার জন্য ছেলেকে আমি উদয়পুর ও পরে আহমেদাবাদে নিয়ে যাই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর বাঁচাতে পারলাম না।’

এদিকে ওই স্কুলছাত্রের মৃত্যুর পরই অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে জনজাতি ও উপজাতি আইনে হত্যার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মৃত শিশুর ময়নাতদন্তের জন্য আহমেদাবাদে পুলিশের একটি দলও পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া ওই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে আপাতত ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। এর পাশাপাশি রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকেও বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি নিশ্চিত করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ঘটনাটি জানতে পেরে শোক প্রকাশ করেছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘দ্রুত সুবিচারের ব্যবস্থা করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর রিলিফ ফান্ড থেকে মৃত শিক্ষার্থীর পরিবারকে ৫ লাখ রুপি দেওয়া হবে।’

টিএম