সুদানের খার্তুম থেকে ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবা যাওয়ার সময় ইথিওপিয়ার একটি এয়ারলাইন্সের দুই পাইলট চলন্ত বিমানে ঘুমিয়ে পড়ায় সেটি সময়মতো অবতরণ করতে পারেনি। তবে বড় ধরনের কোনও দুর্ঘটনা ছাড়াই পরবর্তীতে প্রায় আধা ঘণ্টা পর বিমানটি তার গন্তব্যে অবতরণ করে।

বিমান চলাচলের খবর প্রকাশ করে আসা সংবাদমাধ্যম এভিয়েশন হেরাল্ড বলছে, বিমানের পাইলটের ঘুমিয়ে পড়ার এই ঘটনা ঘটেছে সোমবার। ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের ইটি৩৪৩ ফ্লাইটটি বিমানবন্দরের রানওয়ের কাছে এসে উড়লেও সেটি অবতরণ করছে না দেখে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) রুম থেকে সতর্কতা জারি করা হয়।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, উভয় পাইলট ঘুমিয়ে পড়ায় বোয়িং ৭৩৭ এর অটোপাইলট ব্যবস্থা বিমানটিকে ৩৭ হাজার ফুট উঁচুতে চালু রেখেছিল। বিমানটি পরবর্তী ফ্লাইটের জন্য উড্ডয়নের আগে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে গ্রাউন্ড করা ছিল।

এভিয়েশন হেরাল্ড বলছে, এটিসি থেকে কয়েকবার পাইলটদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সফল হয়নি। বিমানটি রানওয়েতে অবতরণের পরিবর্তে সামনের দিকে উড়তে থাকে, আর সেই সময় অটোপাইলট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অটোপাইলট ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে বিমানে একটি সতর্ক সংকেত বেজে ওঠে; যা পাইলটদের ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে।

পরে বিমানটি অবতরণের জন্য পাইলটরা রানওয়ের আশপাশের এলাকায় প্রায় ২৫ মিনিট ধরে চক্কর দেয়। বিমানবন্দরে অন্যান্য বিমানের অবতরণের সূচি থাকায় বিমানটি ঘুরতে থাকে। পরে সেটি নিরাপদে বিমানবন্দরেরে রানওয়েতে অবতরণ করে। সৌভাগ্যবশত, এই বিমানের কোনও যাত্রীই আহত হননি। তবে বিমানে কতজন যাত্রী ছিলেন সেবিষয়ে কোনও তথ্য জানায়নি এভিয়েশন হেরাল্ড।

বিমান চলাচল পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা এডিএস-বি ইথিওপিয়ার বিমানের পাইলটদের ঘুমিয়ে পড়ার এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। একই সঙ্গে বিমানটি রানওয়ের ওপর দিয়ে উড়ে চলে গেছে বলেও এডিএস-বি জানিয়েছে। এডিএস-বি বিমানের ফ্লাইটটির পথের একটি চিত্র পোস্ট করেছে, যেখানে আদ্দিস আবাবা বিমানবন্দরের কাছের দৃশ্য দেখা যায়।

এভিয়েশন বিশ্লেষক অ্যালেক্স মাচেরাসও টুইটারে এই ঘটনা সম্পর্কে টুইট করেছেন। এতে এই ঘটনাকে ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তবে এজন্য পাইলটের ক্লান্তিকেই দায়ী করেছেন তিনি।
 
এর আগে গত মে মাসেও নিউইয়র্ক থেকে রোম যাওয়ার পথে ৩৮ হাজার ফুট ওপরে আকাশে চলন্ত বিমানের দুই পাইলটের ঘুমিয়ে পড়ার অপর একটি ঘটনা ঘটে।

এসএস