ছোট নৌকায় চেপে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ব্রিটেনে চলতি বছর একদিনে সর্বোচ্চসংখ্যক অভিবাসী পৌঁছানোর রেকর্ড হয়েছে। গত নভেম্বরের পর সোমবার একদিনে এক হাজারের বেশি অভিবাসী দেশটিতে পৌঁছেছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

যুক্তরাজ্য সরকার অবৈধ পথে আসা অভিবাসীদের রুয়ান্ডায় পাঠিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনার ঘোষণা দেওয়ার পরও অভিবাসীদের বিপজ্জনক ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রমের ঢল থামছে না।

ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, সোমবার ইউরোপীয় মূল ভূখণ্ড থেকে ২৭টি নৌকায় করে ব্রিটেনে পৌঁছানো এক হাজার ২৯৫ জন অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে। এর ফলে গত নভেম্বরের ১ হাজার ১৮৫ জনের দৈনিক রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে সোমবারের এই সংখ্যা।

সাধারণত প্রত্যেক বছর গ্রীষ্মের সময় ব্রিটেনে অভিবাসীদের ঢল বৃদ্ধি পায়। তবে অন্যান্য পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে অভিবাসীদের ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার প্রবণতা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের প্রথম আট মাসে অভিবাসীদের ব্রিটেনে পৌঁছানোর হার গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

দেশটির বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন অবৈধ পথে আসা অভিবাসীদের রুয়ান্ডায় নির্বাসনে পাঠানো হবে বলে হুমকি দিয়েছিলেন। তার এই হুমকি এবং অন্যান্য পদক্ষেপের ফলে দেশটিতে ছোট নৌকায় চেপে অভিবাসীদের পৌঁছানোর চেষ্টা হ্রাস পাবে বলে আশা করা হয়েছিল।

গত এপ্রিলে স্বাক্ষরিত এক চুক্তি অনুযায়ী, অবৈধ পথে আসা হাজার হাজার অভিবাসীকে আটকের পর চার হাজার মাইল দূরের পূর্ব আফ্রিকার দেশটিতে পাঠানোর কথা রয়েছে। কিন্তু দেশটির সরকারের এই নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে লন্ডনের হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থা এবং একটি ট্রেড ইউনিয়ন।

আগামী মাসে লন্ডনের হাই কোর্টে এই বিষয়ে শুনানি শুরু হবে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে সরকারের নেওয়া রুয়ান্ডা নীতি অকার্যকর এবং বেআইনি। গত জুন মাসে অভিবাসীদের বহনকারী পরিকল্পিত প্রথম একটি ফ্লাইট ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের শেষ মুহূর্তের নিষেধাজ্ঞায় আটকে যায়।

২০২১ সালে ব্রিটেনে ছোট নৌকায় করে পৌঁছানো অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ২৮ হাজার ৫২৬ জন। যাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক অভিবাসী ছিলেন ইরানের। এরপরই অবস্থান ছিল ইরাক, ইরিত্রিয়া এবং সিরিয়ার।

চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ২২ হাজারের বেশি অভিবাসী ব্রিটেনে পৌঁছেছেন। দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এ বছরের শেষ নাগাদ ব্রিটেনে অভিবাসী পৌঁছানোর সংখ্যা ৬০ হাজারে দাঁড়াতে পারে। ২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ব্রিটেনে পৌঁছানোর পথে কমপক্ষে ১৬৬ জন মারা গেছেন অথবা নিখোঁজ হয়েছেন।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস