প্রযুক্তির দিক দিয়ে অন্যান্য দেশের থেকে কয়েক ধাপ এগিয়ে চীন। এর আগে দেশটি কৃত্রিম সূর্য বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল সারা বিশ্বকে। এবার গরম ও দাবদাহ থেকে রক্ষা পেতে রকেট ও ড্রোনের মাধ্যমে বায়ুস্তরে রাসায়নিক ছিটিয়ে কৃত্রিম বৃষ্টি তৈরি করছে চীন।

১৯৬১ সাল থেকে চীনে উল্লেখযোগ্য হারে গরম বাড়তে শুরু করে। সমগ্র চীনজুড়ে বিশেষ করে  দেশটির দক্ষিণ সিচুয়ান এবং চংগিং প্রদেশে তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে ফসলের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায়। সেকারণে এই এলাকাগুলোর কয়েক হাজার হেক্টর কৃষিজমিতে কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থা করছে চীন সরকার।

খরার হাত থেকে বাঁচতে জল-ধারণকারী বিভিন্ন রাসায়নিক ছিটিয়ে সেচ এবং জলের অভাব রয়েছে এমন জায়গায় কৃষিকাজের উন্নতির চেষ্টা চলছে সরকারি উদ্যোগে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়াংসি নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে আরও বৃষ্টিপাত ঘটাতে ‘ক্লাউড সিডিং’ পদ্ধতি ব্যবহারের পরিকল্পনা চলছে। তীব্র দাবদাহ ও খরায় এ নদীর তীরবর্তী কিছু অঞ্চল ইতোমধ্যে শুকিয়ে গেছে। আর সেজন্যই এই অভিনব পণ্থা গ্রহণ করেছে চীন সরকার।

তবে এই পরিকল্পনা এখনই বাস্তবায়িত করার কথা ভাবছে না দেশটি। এই এলাকাগুলির আকাশে মেঘের স্তর পাতলা হওয়ার কারণেই আপাতত এই পরিকল্পনা স্থগিত রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা গ্যাভিন স্মিড বলেন, এত টাকা ব্যয় করে এই পদ্ধতির দ্বারা জলবায়ুর পরিবর্তন করার চেষ্টা করা খুব একটা লাভজনক এবং ফলপ্রসূ নয়।

ঝড় এবং সাইক্লোন ঠেকাতে আমেরিকাও এই ক্লাউড সিডিং পদ্ধতির ব্যবহার করেছে। তবে জাতিসংঘ এই পদ্ধতি ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার পর থেকে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে দেশটি।

উল্লেখ্য, ক্লাউড সিডিং এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে কৃত্রিম বৃষ্টির জন্য রকেট বা ড্রোন ব্যবহার করে আকাশে রাসায়নিক ছোড়া হয় । এই রাসায়নিক মেঘের সঙ্গে মিশে বিক্রিয়া ঘটায় এবং ফোঁটা ফোঁটা হয়ে বৃষ্টি হিসেবে মাটিতে ঝরে পড়ে। তবে এই কৃত্রিম বৃষ্টি পদ্ধতির মাধ্যমে আবহাওয়ার অবস্থা পরিবর্তন করার ক্ষমতা সীমিত।

আর পদ্ধতি অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় যখন-তখন তা ব্যবহার করে বৃষ্টিপাত ঘটানো সম্ভব নয়। অন্তত সাধারণ মানুষের ক্ষমতার বাইরে রয়েছে এই ক্লাউড সিডিং পদ্ধতি।

এমএ