প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম কমাতে কোনও কিছু না করা হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোকে আগামী পাঁচ থেকে ১০টি ভয়াবহ শীতকালের মুখোমুখি হতে হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন বেলজিয়ামের জ্বালানি মন্ত্রী টিনে ভ্যান ডার স্ট্রাটেন।

গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর ইউরোপসহ পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর ফলে জ্বালানির বিশাল মূল্যবৃদ্ধি মোকাবিলায় ইউরোপের দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে গ্যাসের দাম হ্রাস এবং বিদ্যুতের দাম থেকে গ্যাসের দাম আলাদা করার দাবি জোরাল হচ্ছে।

ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন জানানো দেশগুলো রাশিয়ার গ্যাস এবং তেল আমদানি বন্ধের চেষ্টা করছে। ইউক্রেন যুদ্ধের আগে পর্যন্ত ইউরোপের প্রধান জ্বালানি সরবরাহকারী ছিল রাশিয়া।

গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের মোট চাহিদার প্রায় ৪০ শতাংশ গ্যাস সরবরাহ করেছিল রাশিয়া। বর্তমানে ইউরোপে গ্যাসের সরবরাহ সীমিত করছে দেশটি।

টুইটারে বেলজিয়ামের জ্বালানি মন্ত্রী টিনে ভ্যান ডার স্ট্রাটেন বলেছেন, ইউরোপে গ্যাসের দাম জরুরিভিত্তিতে কমিয়ে ফেলা দরকার।  গ্যাস ও বিদ্যুতের দামের যোগসূত্র কৃত্রিম এবং এর সংস্কার করা দরকার।

তিনি বলেন, ‘যদি আমরা কিছু না করি, তাহলে আগামী পাঁচ থেকে দশটা শীত ভয়ানক হবে। আমাদের অবশ্যই গোড়ায় কাজ করতে হবে, ইউরোপীয় স্তরে। গ্যাসের দামে লাহাম দেওয়ার জন্য কাজ করতে হবে। 

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ইউরোপে বিদ্যুতের দামও আকাশচুম্বী হয়েছে। চলতি সপ্তাহে এই অঞ্চলে বিদ্যুতের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।

অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর কার্ল নেহামার বলেছেন, এই মুহূর্তে জ্বালানির বাজারে ঘটা আমাদের উন্মাদনা বন্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, বিদ্যুতের দাম অবশ্যই কমিয়ে ফেলতে হবে। বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের দাম আলাদা করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

নেহামার বলেন, ‘আমরা (রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির) পুতিনকে প্রতিদিন ইউরোপের বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করতে দিতে পারি না। 

ইউরোপে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এখনও ব্যাপকভাবে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করা হয়। গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুতের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে।

২০২০ সালে ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাসের বৃহত্তম আমদানিকারক ছিল জার্মানি। রাশিয়া সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় শীতের আগে গ্যাসের মজুদ বাড়ানোর জন্য দৌড়ঝাপ শুরু করে দিয়েছে জার্মানি। আগামী অক্টোবরের মধ্যে গ্যাসের সক্ষমতার ৮৫ শতাংশ পূরণ করতে চায় দেশটি।

সূত্র: বিবিসি।

এসএস