দীর্ঘ দুই বছরের বিরতির পর আবারও ঐতিহ্যবাহী ‘লা টমাটিনা’ উৎসবে মাতল স্পেন। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত দুই বছর এই উৎসব হয়নি। তবে বুধবার (৩১ আগস্ট) করোনা মহামারির আগের মতোই ব্যাপক আনন্দ আর উদযাপনে অনুষ্ঠিত হয় টমেটো মাখামাখির এই উৎসব।

এতে স্পেনের পূর্বাঞ্চলীয় বুনোল শহরের হাজারো স্থানীয় বাসিন্দার সঙ্গে যোগ দেন অনেক বিদেশি পর্যটকও। বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির কারণে দুই বছর পর অনুষ্ঠিত হওয়া এবারের এই ‘লা টমাটিনা’ উৎসবটি ছিল এর ৭৫ তম সংস্করণ।

উৎসবের সময় বুধবার স্পেনের পূর্বাঞ্চলীয় বুনোল শহরে ১৩০ টন অতিরিক্ত পাকা টমেটো অংশগ্রহণকারীরা একে অপরের দিকে নিক্ষেপ করেন। মূলত একে অপরের দিকে পাকা টমেটো ছুঁড়ে তারা একে অন্যকে লাল রসে ঢেকে দেন।

সংবাদমাধ্যম বলছে, ব্যতিক্রমী এই উৎসবের সময় সবাই একে অপরের দিকে টমেটো ছুঁড়তেই ব্যস্ত ছিলেন। কেউ বা ঝাঁপিয়ে পড়ছেন টমেটোর ওপরে। কেউ বা নিজের শরীরে মেখে নিচ্ছেন লাল টকটকে টমেটো।

কেবল স্পেনের বাসিন্দারাই নয়, ঐতিহ্যবাহী এই উৎসবে যোগ দিতে সারা বছর অপেক্ষা করেন অনেক বিদেশি নাগরিকও।

১৯৪৫ সালে স্পেনে ‘লা টমাটিনা’ উৎসবের প্রচলন হয়। সেসময় বুনোল শহরের গ্রামবাসীদের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ত আনন্দ প্রকাশ থেকে টমাটিনার উদ্ভব হয়েছিল বলে জানা যায়। তবে ১৯৫০-এর দশকে জেনারেল ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কোর একনায়কতান্ত্রিক শাসনের সময়ে এটি কিছু সময়ের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়।

পরে এটি আবারও শুরু হয় এবং ১৯৮০-এর দশকে স্পেনজুড়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। সময়ের সাথে সাথে স্পেনের পাশাপাশি বাইরেও এ উৎসবের জনপ্রিয়তা ক্রমেই বাড়ছে।

সংবাদমাধ্যম বলছে, প্রতিবছর আগস্টের শেষ বুধবার স্পেনের ভ্যালেন্সিয়া থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি গ্রাম হয়ে ওঠে হাজারো মানুষের গন্তব্যস্থান।

এ উৎসবে অংশগ্রহণকারীরা পরস্পরকে পাকা টমেটো ছুড়ে মারে। টমেটোর লাল রসে ভিজে একাকার হয়ে যায় অংশগ্রহণকারীরা। প্রতি বছর আগস্টের শেষ বুধবার সকালে শুরু হয়ে দুপুর পর্যন্ত চলে টমেটো উৎসব।

টিএম