শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম, ছবি : অ্যারাবিয়ান বিজনেস

বন্যাদুর্গত পাকিস্তানকে জরুরি সহায়তা হিসেবে নিজের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ১ কোটি ৩০ লাখ ডলার প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী এবং দেশটির বাণিজ্যিক কেন্দ্র দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম।

দুবাই শাসকের নিজস্ব দুই সংস্থা মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ (এমবিআরজিআই) এবং মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যান্ড চ্যারিটি এস্টাব্লিশমেন্টের (এমবিআরসিএইচ) মাধ্যমে দেওয়া হবে এই অর্থ।

দুবাই প্রশাসনের জনসংযোগ বিভাগ দুবাই মিডিয়া (ডিএমও) অফিস শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকায় জাতিসংঘভিত্তিক বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তাবিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম যে ত্রাণ তৎপরতা চালাচ্ছে, তাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে এই অর্থ প্রদান করা হচ্ছে।

‘এ কারণে বন্যা উপদ্রুত এলাকার লোকজনকে খাদ্য সহায়তা প্রদানের জন্যই যেন এই অর্থ ব্যয় করা হয়, সে জন্য পাকিস্তানের সরকারকে আহ্বান জানানো হচ্ছে,’ বলা হয় ডিএমওর বিবৃতিতে।

উপমহাদেশের তিন দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশে বর্ষাকাল শুরু হয় জুন মাস থেকে। চলতি বছরের বর্ষাকালে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে খরা ও বাংলাদেশে বিগত বছরগুলোর তুলনায় কম বৃষ্টিপাত হলেও পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত জুলাই মাসেই বেলুচিস্তান ও খাইবার-পাখতুনওয়া প্রদেশের বেশ কিছু এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছিল।

তার মধ্যেই গত সপ্তাহের শেষ দিকে শুরু হওয়া টানা প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে পাকিস্তানের তিন প্রদেশ সিন্ধু, বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনওয়ার বিপুল এলাকায় নজিরবিহীন বন্যা দেখা শুরু হয়েছে। দেশটির জলবায়ুবিদদের মতে, চলতি বর্ষাকালে পাকিস্তানে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে—তা গত ত্রিশ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

সরকারের দুর্যোাগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বন্যায় এর মধ্যেই নিহত হয়েছেন ১ হাজার ১৩৬ জন মানুষ, বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ এবং ৩ হাজার ৪৫০ কিলোমিটারের বেশি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক-মহাসড়ক সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। বর্তমানে পাকিস্তানের ৩ ভাগের এক ভাগ এলাকা বন্যার পানির নিচে আছে।

জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বন্যার কারণে পাকিস্তানে চরম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছেন অন্তত ৬৪ লাখ মানুষ। তাদের মধ্যে নারী ও মেয়েদের সংখ্যা কমপক্ষে ১৬ লাখ। এদের সবারই জরুরি ভিত্তিতে মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।     

সূত্র : অ্যারাবিয়ান বিজনেস

এসএমডব্লিউ