নাইজেরিয়ার একটি মসজিদে হানা দিয়ে অস্ত্রের মুখে বেশ কয়েকজন মুসল্লিকে তুলে নিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা। শুক্রবার দেশটির উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ জামফারার জুগু শহরের জুমুয়াত কেন্দ্রীয় মসজিদে ঘটে এ ঘটনা।

জামফারার রাজধানী গুসাউ থেকে জুগুর দুরত্ব ১৭০ কিলোমিটার। সন্ত্রাসীরা যখন হানা দেয়, সে সময় মসজিদটিতে আসরের নামাজ চলছিল।

জামফারা প্রদেশ পুলিশের মুখপাত্র মোহাম্মেদ শেহু রয়টার্সকে জানান, ঠিক কতজন মুসল্লিকে অপহরণ করা হয়েছে, তার সঠিক সংখ্যা এখনও পাওয়া যায়নি। কারা এই অপহরণের সঙ্গে যুক্ত— তা ও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

ইব্রাহিম আমিনু নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী রয়টার্সকে জানান, সন্ত্রাসীরা সাধারণ মুসল্লির বেশে এসেছিল এবং তাদের কাপড়ে আড়ালে লুকানো ছিল অস্ত্র। যখন তারা মসজিদে ঢোকে, সে সময় আসরের নামাজের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মুসল্লিরা।

মসজিদে ঢোকার পরেই কাপড়ের আড়াল থেকে অস্ত্র বের করে ফাঁকা গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা এবং সেখান থেকে বেশ কয়েকজন মুসল্লিকে জিম্মি করে নিয়ে যায়।

মোহাম্মদ বুকার জুগু নামের এক ব্যক্তি জানান, অপহৃত মুসল্লিদের মধ্যে তার ২২ বছর বয়সী ছোটোভাইও রয়েছেন। শুক্রবার রাতে ছোটভাইয়ের মোবাইল নাম্বার থেকে জুগুর মোবাইলে কল আসে। সেখানে অপরিচিত একটি কণ্ঠস্বর তাকে ভাইয়ের মুক্তিপণ বাবদ টাকা প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেয়। তারপর আর কোনো ফোন আসেনি।

জামফারা পুলিশের মুখপাত্র মোহাম্মদ শেহু বলেন, ‘অপরাধীদের ধরতে ইতোমধ্যে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা অভিযান শুরু করেছেন।’

গত কয়েক বছর ধরে দেশজুড়ে গড়ে ওঠা বেশ কিছু সশস্ত্র সন্ত্রাসীগোষ্ঠী ও জঙ্গি সংগঠন বোকো হারামের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন নাইজেরিয়াবাসী। স্থানীয়ভাবে এসব সন্ত্রাসীগোষ্ঠীকে ‘ডাকাতদল’ বলা হয়। যে কোনো সময়, দেশের যে কোনো গ্রামে-শহরে হামলা চালায় এই ডাকাতদল।

সাধারণত মোটরসাইকেল ও গাড়িতে করে এসব ডাকাতদল আসে; হামলাস্থলে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়, লুটপাট করে এবং মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করে।

নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি গত জানুয়ারির প্রথম দিকে এসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন। তার পর থেকে নাইজারের বিভিন্ন স্থানে সামরিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে সংঘাত হচ্ছে এসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর।

এসএমডব্লিউ