যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন থেকে চুরি হয়েছিল অত্যন্ত ব্যয়বহুল গাড়ি বেন্টলি মুলসান। এরপর সেখানে এই গাড়ির আর কোনো হদিশ পাওয়া যায়নি। তবে অবশেষে সেই গাড়ির খোঁজ মিলেছে, আর সেটি পাকিস্তানের বন্দরনগরী করাচিতে।

শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) করাচি শহরের ডিএইচএ এলাকার একটি বাড়িতে পার্ক করা অবস্থায় গাড়িটি উদ্ধার করা হয়। রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লন্ডন থেকে চুরি হয়ে যাওয়া অত্যন্ত ব্যয়বহুল গাড়ি বেন্টলি মুলসান উদ্ধার করেছে করাচি কর্তৃপক্ষ। চুরি হয়ে যাওয়ার পর ব্যয়বহুল এই গাড়িটি লন্ডন থেকে পাকিস্তানের বন্দর শহরে পাঠানো হয়েছিল।

করাচির কালেক্টরেট অব কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (সিসিই) নিশ্চিত করেছে যে, চুরি হয়ে যাওয়া বেন্টলি মুলসান গাড়িটি করাচির ডিএইচএ এলাকার একটি বাড়িতে পার্ক করা রয়েছে বলে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে জানায় যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা। এরপরই সেটি উদ্ধার করেন পাকিস্তানের কর্মকর্তারা।

ফেডারেল বোর্ড অব রেভিনিউ'স কালেক্টরেট অব কাস্টমস এক বিবৃতিতে বলেছে: ‘বন্ধুত্বপূর্ণ একটি দেশের জাতীয় সংস্থা থেকে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পাওয়া যায় যে একটি ধূসর রংয়ের বেন্টলি মুলসান গাড়ি করাচি শহরের ডিএইচএ এলাকার একটি বাড়িতে পার্ক করা রয়েছে। ভি৮ অটোমেটিক এই গাড়িটির ভিআইএন নম্বর SCBBA63Y7FC001375, ইঞ্জিন নম্বর CKB304693।

দ্যা নিউজ বলছে, গাড়িটি চুরির পর এতে সংযুক্ত ট্রেসিং ট্র্যাকার অপসারণ বা বন্ধ করতে ব্যর্থ হয় অপরাধীরা। আর এর ফলে উন্নত ট্র্যাকিং সিস্টেমের মাধ্যমে গাড়ির সঠিক অবস্থান খুঁজে পায় যুক্তরাজ্য কর্তৃপক্ষ।

এদিকে পাকিস্তানের আরেক সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ কাস্টমস কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, চুরি যাওয়া গাড়িটি ইউরোপের একটি দেশের কনস্যুলেটের জাল নথিতে পাকিস্তানে আনা হয়েছিল। এফবিইউ কর্মকর্তারা যখন করাচির ওই বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে তখন তারা বেন্টলির গাড়ির পেছনে পাকিস্তানি রেজিস্ট্রেশন নম্বরযুক্ত প্লেট দেখতে পায়।

পাকিস্তানি কর্মকর্তারা বলছেন, উদ্ধারকৃত এই গাড়ির চেসিস নম্বরটি যুক্তরাজ্যের কর্তৃপক্ষের দেওয়া চুরি যাওয়া গাড়ির প্রদত্ত বিবরণের সাথে মিলে গেছে।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, গাড়িটি অন্য একজনের মাধ্যমে কিনেছেন বলে গাড়ির (পাকিস্তানি) মালিক দাবি করেছেন। পাকিস্তানের কাস্টমস এ বিষয়ে একটি মামলা নথিভুক্ত করেছে এবং গাড়ির বিক্রয় ও ক্রয়ের সাথে জড়িত দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে দেশটির একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- করাচির ১০নং সাউথ স্ট্রিটের বাসিন্দা শফি আহমেদের ছেলে জামিল শফি এবং খায়াবন-ই-রুমির ১৫৯ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা রফিকের ছেলে নাভিদ বিলওয়ানি।

করাচির এক কাস্টমস কর্মকর্তা বলছেন, ‘গাড়িটি কিভাবে করাচিতে এলো তা আমরা তদন্ত করে দেখছি। নিশ্চিতভাবেই, জাল চালান এবং ভুয়া নিবন্ধন ডকুমেন্টেশন নিয়ে করাচিতে পৌঁছেছিল এই গাড়িটি।’

টিএম