নয়াদিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে পৌঁছেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে দুই দেশের সরকার প্রধানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বেলা পৌনে ১২টার দিকে হায়দ্রাবাদ হাউসে পৌঁছান দুই প্রধানমন্ত্রী। ভারতের বার্তা সংস্থা এএনআইয়ের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

সূচি অনুযায়ী, বাংলাদেশ ও ভারতের দুই প্রধানমন্ত্রী শুরুতে একান্ত বৈঠক করেন। পরে তাদের নেতৃত্বে হায়দ্রাবাদ হাউসে বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শুরু হয়।

বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতার উন্নতি, আঞ্চলিক সংযোগের উদ্যোগগুলোর সম্প্রসারণ এবং দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার মতো বিভিন্ন বিষয়ে আলোচ্যসূচির শীর্ষে রয়েছে। হায়দ্রাবাদ হাউসে বৈঠক শেষে তাদের উপস্থিতিতে দুই দেশের মাঝে কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে। পরে সেখান থেকে নরেন্দ্র মোদির দেওয়া মধ্যাহ্ন ভোজে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এর আগে, মঙ্গলবার সকালের দিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজঘাটে ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা জানান। পরে নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে শেখ হাসিনাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এসময় সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভারত আমাদের বন্ধু। আমি যখনই ভারতে আসি, এটা আমার জন্য খুবই আনন্দের, বিশেষ করে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের অবদানের কথা আমরা সবসময় স্মরণ করি। আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, আমরা একে অপরকে সহযোগিতা করছি।’

আরও পড়ুন: তিস্তার পানি না দিলে ইলিশও দেবো না: শেখ হাসিনা

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আশা করি এটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হবে এবং আমাদের মূল লক্ষ্য অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়ন এবং আমাদের জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা- যা আমরা করতে সক্ষম হব। বন্ধুত্বের মাধ্যমে আপনি যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে পারেন। সুতরাং আমরা সবসময় এটিই করি।’

সোমবার নয়াদিল্লিতে পৌঁছানোর পরপরই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এসময় তারা বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। পরে দিল্লির নিজামুদ্দিন আউলিয়া দরগাহও পরিদর্শন করেন শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও এই সফরে ভারতের প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মু এবং উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন শেখ হাসিনা।

ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতির আওতায় নয়াদিল্লির এক গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বাংলাদেশ। দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা ও সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চার দিনের ভারত সফর শুরু হয়েছে সোমবার।

আরও পড়ুন: ভারত আমাদের বন্ধু, আমরা একে অপরকে সহযোগিতা করছি: শেখ হাসিনা

এএনআই বলছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে, ভারত ও বাংলাদেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাস্তব ফলাফল অর্জন করেছে। এর মধ্যে ভূমি ও সমুদ্রসীমার সীমানা নির্ধারণ, নিরাপত্তা, যোগাযোগ, উন্নয়ন সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক বিনিময়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি, সামুদ্রিক অর্থনীতি ও প্রতিরক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে অগ্রগতি উল্লেখযোগ্য।

এর আগে সোমবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪০মিনিটে (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভিভিআইপি ফ্লাইটটি পালাম বিমানবন্দরে পৌঁছায়।

এসময় প্রধানমন্ত্রীকে ভারতের রেল ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী দর্শনা বিক্রম জারদোশ এবং দেশটিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান স্বাগত জানান। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাকে স্বাগত জানানো নৃত্যশিল্পীদের সাথে ছবিও তোলেন।

এসএস