ভারতে চিতার বিলুপ্তি হয় ১৯৫০- এর দশকে। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর দেশটিতে আফ্রিকা থেকে আনা হবে আটটি চিতা। নামিবিয়া থেকে এসে মধ্যপ্রদেশের কুনো পালপুর জাতীয় উদ্যানে ঠাঁই পাবে এসব চিতা।

একইদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্মদিন। উদ্যানে উপস্থিত থেকে নিজেই চিতাগুলোকে  স্বাগত জানাবেন তিনি। জন্মদিনের দিন নিজ হাতেই সেখানে চিতাগুলো ছেড়ে  আসবেন ।   

বিশেষভাবে পরিবর্তিত বি-৭৪৭ জাম্বো জেট বিমানে চিতাগুলোকে ভারতে নিয়ে আসা হবে। ‘প্রজেক্ট চিতা’ সফল করতে ইতোমধ্যেই বিমানটি নামিবিয়ায় পৌঁছেছে। এটি টানা ১৬ ঘণ্টা বিরতি ছাড়াই উড়তে পারে।

যে বিমানে করে আফ্রিকা থেকে চিতাগুলো আনা হবে, সেটির সামনের অংশে আঁকা হয়েছে একটি চিতার মুখ। নতুনভাবে সাজানো হয়েছে এর ভেতরের অংশ। ভেতরে রাখা হয়েছে খাঁচা। 

বিমানের ভেতরে থাকবেন একজন পশুচিকিৎসক। যাত্রাপথে চিতাগুলোর যাতে কোনো অসুবিধা না হয়, তা দেখে রাখার জন্যই পশুচিকিৎসককে রাখা হবে। এছাড়া থাকবেন বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বেশ কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী।

ভারতীয় বন বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পুরো যাত্রাপথে চিতাগুলোকে খালি পেটে রাখা হবে, যাতে তাদের বমি বমি ভাব বা অন্য কোনো অসুবিধা না হয়।

বিমানে চিতাগুলো আনার পর হেলিকপ্টারে করে জয়পুর থেকে মধ্যপ্রদেশের শেওপুর এলাকার কুনো জাতীয় উদ্যানে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানেই তারা স্থায়ী ভাবে বসবাস করবে। আটটি চিতার পাঁচটি মহিলা ও তিনটি পুরুষ৷ দুটি আবার সম্পর্কে সহোদর।

এক জোটে শিকার করাই  চিতাদের অভ্যাস। প্রথমেই সরাসরি জঙ্গলে না ছেড়ে তারের বেড়ায় ঘেরা মুক্ত প্রান্তরে ছাড়া হবে আটটি চিতাকে। যাতে তারা পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে।

অতিরিক্ত শিকার এবং বাসস্থান ধ্বংসের মতো কারণে ভারত থেকে ধীরে ধীরে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে বিড়াল প্রজাতির প্রাণী চিতা। ১৯৪৭ সালে মারা যায় ভারতের শেষ তিন চিতা। পাঁচ বছর পর ১৯৫২ সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে চিতাকে বিলুপ্ত বলে ঘোষণা করা হয়।

কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে , দক্ষিণ আফ্রিকা অথবা নামিবিয়া থেকে আগামী পাঁচ বছর ধরে ধাপে ধাপে ৫০টি চিতা ভারতে আনা হবে। এর মধ্যে অক্টোবর মাসে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আরও ১২টি চিতা আনা হবে বলেও জানা গিয়েছে। মোদি সরকারের দাবি, ভারতের অরণ্যে হারিয়ে যাওয়া সেই চিতা ফেরানোর উদ্দেশ্যেই এ পদক্ষেপ।

আরএইচ