শুক্রবার উজবেকিস্তানের সমরখন্দে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে বৈঠক করেন নরেন্দ্র মোদি এবং ভ্লাদিমির পুতিন

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্মদিন আজ। শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় এই প্রধানমন্ত্রী তার ৭২তম জন্মদিন পালন করছেন। জন্মদিনের ঠিক একদিন আগে শুক্রবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদি।

৭২তম জন্মদিন উদযাপনের কয়েক ঘণ্টা আগে শুক্রবার উজবেকিস্তানের সমরখন্দে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে মোদিকে পুতিন বলেন, তিনি জন্মদিনের আগাম শুভেচ্ছা দিতে পারবেন না। শনিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবারের এই বৈঠকে দুই নেতা ইউক্রেন সংঘাতের মতো সংবেদনশীল ইস্যুসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন। এমনকি ভারতীয় উদ্বেগের কথা স্বীকার করার পাশাপাশি পূর্ব ইউরোপের দেশটির পরিস্থিতি সম্পর্কে অকপট মন্তব্যও করেছেন পুতিন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদিকে পুতিন বলেন, ‘আমি ইউক্রেনের সংঘাতের বিষয়ে আপনার অবস্থান এবং আপনার উদ্বেগের বিষয়েও জানি। আমরা চাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই সব শেষ হোক। সেখানে যা ঘটছে তা আমরা আপনাকে অবগত রাখব।’

তবে এক দিক থেকে রুশ প্রেসিডেন্ট পিছিয়ে ছিলেন। বৈঠকের সময় পুতিন বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদিকে জন্মদিনের অগ্রিম শুভেচ্ছা দিতে পারবেন না। যদিও আর কয়েক ঘণ্টা পরই মোদি শনিবার তার জন্মদিন উদযাপন করতে চলেছেন।

শুক্রবার সমরখন্দে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দুই নেতার সাক্ষাতের সময় পুতিন বলেন, তিনি ‘জানেন প্রধানমন্ত্রী মোদি আগামীকাল তার জন্মদিন উদযাপন করতে চলেছেন, তবে (এরপরও) তিনি আগাম অভিনন্দন জানাতে পারবেন না।’

প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, ‘আগামীকাল আমার প্রিয় বন্ধু, আমরা জানি আপনি আপনার জন্মদিন উদযাপন করতে চলেছেন, কিন্তু রাশিয়ান ঐতিহ্য অনুসারে, আমরা কখনোই অগ্রিম অভিনন্দন জানাতে পারি না। তাই আমি এখন তা (শুভেচ্ছা জানাতে) পারি না।’

তবে শুভেচ্ছ না জানালেও ভারতের প্রতি পুতিন তার উষ্ণ অভিনন্দন আরও প্রসারিত করেছেন এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘...কিন্তু আমি আপনাকে জানাতে চাই যে, আমরা এটি সম্পর্কে জানি এবং আমরা আপনাকে শুভকামনা জানাই এবং আমরা একটি বন্ধুত্বপূর্ণ ভারতীয় জাতির জন্য শুভকামনা জানাই, একইসঙ্গে আমরা আপনার নেতৃত্বে ভারতের সমৃদ্ধি কামনা করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নশীল, আমাদের একটি কৌশলগত অংশীদারিত্বের প্রকৃতি রয়েছে এবং উভয় দেশ খুব দ্রুত সেই সম্পর্কের উন্নয়ন চালিয়ে যাচ্ছে।’

টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১৭ সেপ্টেম্বর তার ৭২তম জন্মদিন উদযাপন করছেন এবং দিনটির জন্য তার ব্যস্ত শিডিউল রয়েছে। তিনি বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ, নারীর ক্ষমতায়ন, দক্ষতা ও যুব উন্নয়ন এবং পরবর্তী প্রজন্মের অবকাঠামো সংক্রান্ত চারটি বৈচিত্র্যময় অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা দেবেন।

উজবেকিস্তানের সমরখন্দে নরেন্দ্র মোদির এই সফর বেশ গুরুত্বপূর্ণ কারণ ভারত এসসিও’র পরবর্তী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিতে চলেছে। উজবেকিস্তান হলো এসসিও ২০২২-এর বর্তমান সভাপতি। উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শাভকাত মির্জিওয়েভ ২২ তম শীর্ষ সম্মেলনের জন্য সমরখন্দে কংগ্রেস কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে স্বাগত জানান।

এদিকে পরবর্তী বছর সংস্থার সভাপতির পদ গ্রহণের জন্য ভারতকে অভিনন্দন জানিয়েছেন পুতিন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ছাড়াও, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও ভারতকে এসসিও প্রেসিডেন্সির জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।

এসসিওতে বর্তমানে আটটি সদস্য রাষ্ট্র রয়েছে। তারা হলো- চীন, ভারত, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, রাশিয়া, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান এবং উজবেকিস্তান। এই সংস্থার চারটি পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হলো- আফগানিস্তান, বেলারুশ, ইরান এবং মঙ্গোলিয়া।

এই চারটি দেশই এসসিও’র পূর্ণ সদস্যপদ পেতে আগ্রহী। এছাড়া সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের ছয়টি ‘ডায়ালগ পার্টনার’ও রয়েছে। তারা হলো- আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, কম্বোডিয়া, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং তুরস্ক।

টিএম