চাইনিজ সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এর প্রধান মহামারি বিশেষজ্ঞ উ জুনিউ

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেই চীনে প্রথমবারের মতো মাঙ্কিপক্স ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর একদিনের মাথায় এবার বিদেশিদের স্পর্শ করার বিরুদ্ধে স্থানীয়দের সতর্ক করেছেন চীনের শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদেশিদের স্পর্শ না করতে স্থানীয়দের প্রতি সতর্কতা উচ্চারণ করা চীনের ওই শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নাম উ জুনিউ। তিনি চাইনিজ সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এর প্রধান মহামারি বিশেষজ্ঞ। চীনা মাইক্রোব্লগিং ওয়েবসাইট ওয়েইবো-তে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি বিদেশীদের ত্বকের সাথে যোগাযোগ বা সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে স্থানীয়দের পরামর্শ দিয়েছেন।

বিবিসি বলছে, চীনের শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা উ জুনিউ’র এই পোস্টটি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কেউ কেউ এটিকে বর্ণবাদী হিসেবেও চিহ্নিত করেছেন। তবে মাইক্রোব্লগিং ওয়েবসাইটে দেওয়া মূল পোস্টের মন্তব্যগুলো প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

গত শনিবার ওয়েইবো-তে নিজের পেইজে উ জুনিউ বলেন, ‘সম্ভাব্য মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য এবং আমাদের স্বাস্থ্যকর জীবনধারার অংশ হিসাবে বিদেশিদের সাথে ত্বক থেকে ত্বকের সরাসরি যোগাযোগ না করতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

এছাড়াও গত তিন সপ্তাহে বিদেশ থেকে ফিরে আসা সাম্প্রতিক ভ্রমণকারী এবং অপরিচিতদের ত্বকের সাথে ত্বকের যোগাযোগ এড়াতেও স্থানীয়দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন চীনের এই প্রধান মহামারি বিশেষজ্ঞ।

সম্প্রতি চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর চংকিংয়ে বিদেশ-ফেরত এক ব্যক্তির মধ্যে মাঙ্কিপক্সের প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত করে চীনা কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার একদিনের মাথায় বিদেশি থেকে দূরে থাকার এই মন্তব্য পোস্ট করেন উ জুনিউ। অবশ্য মাঙ্কিপক্সে সংক্রমিত ব্যক্তিটি কি চীনা নাগরিক নাকি বিদেশি তা এখনও স্পষ্ট নয়।

উ জুনিউ’র এই পোস্টটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়ার পাশাপাশি পোস্টটি ওয়েইবোতে ব্যাপক সমালোচনামূলক মন্তব্যের সম্মুখীন হয়েছে। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘এ ধরনের কথা বলা খুব অনুপযুক্ত। (করোনা) মহামারির শুরুতে, কিছু বিদেশি (আমাদের রক্ষা করেছিল) এই বলে যে চীনারা ভাইরাস নয়।’

ওয়েইবোতে আরেকজন বিদেশি ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘এটা কতটা বর্ণবাদী? আমার মতো যারা প্রায় দশ বছর ধরে চীনে বসবাস করছে তাদের কী হবে? সীমান্ত বন্ধ থাকার কারণে আমরা আমাদের পরিবারকে ৩-৪ বছর ধরে দেখিনি।’

করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন কোভিড নীতি জারি রেখেছে চীন। চীনের এই কোভিড পলিসির মধ্যে রয়েছে আকস্মিক লকডাউন, সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া, বাধ্যতামূলক করোনা পরীক্ষা এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা।

টিএম