ফাইল ছবি

পাকিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতিতে বিরক্তি ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্টের এক বিচারপতি। এছাড়া সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা হচ্ছে কিনা সেটি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

একইসঙ্গে অনার কিলিংয়ের বিরুদ্ধে যথাযথ আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে না বলেও দুঃখ প্রকাশ করেছেন ওই বিচারপতি। রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতিতে বিরক্তি ও ক্ষোভ প্রকাশ করা ওই বিচারপতির নাম কাজী ফয়েজ ঈসা। তিনি পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের একজন সিনিয়র বিচারপতি। এর আগে তিনি বেলুচিস্তান হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ছিলেন তিনি।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন বলছে, গত শনিবার পাকিস্তানের আইন ও বিচার কমিশনের আয়োজিত নবম বিচারিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বিচারপতি কাজী ফয়েজ ঈসা। সেখানেই এসব মন্তব্য করেন তিনি।

সংবাদমাধ্যম বলছে, বিচারিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সময় বিচারপতি ঈসা সন্ত্রাসীদের সাথে আলোচনা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে কারা আলোচনা করছে এবং সেসব আলোচনায় সন্ত্রাসীদের কী প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে সেটি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার সোয়াতের পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন এই বিচারপতি।

এসময় বিচারপতি ঈসা জিজ্ঞাসা করেন, কোথায় আলোচনা হচ্ছে এবং এই আলোচনা করতে কে তাদের অনুমোদন দিয়েছে? তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘আমরা কি তাদের (সন্ত্রাসীদের) বলছি ‘দয়া করে ছয়টি নয়, পাঁচটি স্কুলে বোমা মারুন এবং অনুগ্রহ করে কিছু টাকা ও অস্ত্র নিন।’

সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় বিচারপতি ঈসা উদ্বেগ প্রকাশ করেন, পাকিস্তানে প্রত্যেকের জীবনের অধিকার এবং বাধ্যতামূলক শিক্ষার সাংবিধানিক নিশ্চয়তা আক্রমণের মুখে পড়েছে।

পাকিস্তানের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরার জন্য সম্মেলনে কাজী ফয়েজ ঈসা ১৯৭০ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গ্লোবাল টেররিজম ডেটাবেসের তথ্যও শেয়ার করেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হামলার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি জানান, পাকিস্তানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় এক হাজারের মতো হামলা হয়েছে।

সম্মেলনে অনার কিলিং এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়েও কথা বলেন পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র এই বিচারপতি। তিনি ‘অনার কিলিং’-এর বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইনকে ‘ডেড লেটার’ বলে আখ্যায়িত করে বলেন, আইনটি কেবল কাগজে কলমে রয়েছে এবং কখনোই এটি বাস্তবায়িত হয়নি।

সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা মোকাবিলায় সামগ্রিক সংস্কার আনতে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান কাজী ফয়েজ ঈসা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পাকিস্তানে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং গবাদি পশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

টিএম