মানুষের কারণে মঙ্গলে জমেছে ৭ হাজার কেজিরও বেশি আবর্জনা
শত শত বছর আগে সৌরজগত সম্পর্কে ধারণা লাভের পর থেকেই সূর্যকে কেন্দ্র করে আবর্তন করা গ্রহ-উপগ্রহের নিয়ে ব্যাপক কৌতুহল ছিল মানুষের।
সেসবের মধ্যে বিশেষ উৎসাহ ছিল মঙ্গল গ্রহ সম্পর্কে। সৌরজগতের ‘লাল গ্রহ’ নামে পরিচিত মঙ্গলের সঙ্গে পৃথিবীর সাদৃশ্যই এ আগ্রহের মূল কারণ।
বিজ্ঞাপন
সেই উৎসাহে ভর দিয়েই আজ থেকে প্রায় ৫০ বছর আগে প্রথমবারের মতো মঙ্গলে নভোযান পাঠায় যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল অ্যারোনেটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা)। আগামী ২০৩০ সালে মানব সভ্যতার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সেই গ্রহটিতে মানুষ পাঠানোর লক্ষ্যও রয়েছে নাসার।
যদিও এখনও মঙ্গলে মানুষের পদচিহ্ন পড়তে আরও আট বছর বাকি, কিন্তু তাই বলে মানবসৃষ্ট কারণে মঙ্গলের পরিবেশ দূষণ থেমে নেই। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবোটিক্স বিভাগের পোস্ট ডক্টরাল গবেষক ক্যাগরি কিলিক ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘মঙ্গল গ্রহে বতর্মানে মানবসৃষ্ট আবর্জনা জমেছে ৭ হাজার ১১৮ কেজিরও বেশি। গত ৫০ বছরে মঙ্গল-অভিযানের অংশ হিসেবে পাঠানো বিভিন্ন নভোযান থেকেই উত্তপত্তি এসব আবর্জনার।’
— NASAs Perseverance Mars Rover (@NASAPersevere) June 15, 2022
জাতিসংঘের আউটার স্পেস অ্যাফেয়ার্স কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ৫০ বছরে মঙ্গল গ্রহের উদ্দেশে মোট ১৪টি ভিন্ন ভিন্ন অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এসব অভিযানে পাঠানো নভোযানের সংখ্যা মোট ১৮টি।
২০২২ সালের আগস্টের মাঝামাঝি নাসা ঘোষণা করে, মঙ্গল গ্রহে তাদের পাঠানো পর্যবেক্ষক রোবট পারসিভিয়ারেন্স মার্স রোভার গ্রহটিতে একটি বড় আকারের বাতিল জঞ্জাল খুঁজে পেয়েছে।
নাসার ঘোষণায় আরও বলা হয়—কেবল এই জঞ্জালই নয় মঙ্গলের বিভিন্ন এলাকায় আরও যথেষ্ট পরিমাণে নভোযানের ধ্বংস্বাবশেষ ও আবর্জনা দেখতে পেয়েছে প্রিজার্ভেন্স মার্স রোভার।
— Erin Gibbons (@ErinSpaceCase) April 27, 2022
ক্যাগরি কিলিক এনডিটিভিকে বলেন, মঙ্গলে মানবসৃষ্ট আবর্জনা জমছে মূলত বাতিল হার্ডওয়্যার এবং নিষ্ক্রিয় বা ধ্বংসপ্রাপ্ত নভোযানের কারণে। মঙ্গলের পৃষ্টে এ পর্যন্ত যত নভোযান নেমেছে, সেসবের সুরক্ষার জন্য সেসবের প্রতিটির সঙ্গে বিশেষ একপ্রকার মডিউল সংযুক্ত ছিল। অবতরণ সহজ ও নিরাপদ করতে প্রতিটি নভোযানেই হিট শিল্ড ও প্যারাসুটও ছিল। মঙ্গলে নামার পর এসব মডিউল, হিট শিল্ড ও প্যারাসুট আর কোনো কাজে আসে না। সেখানেই পড়ে থাকে সেসব।’
এছাড়া এ পর্যন্ত যতন নভোযান পাঠানো হয়েছে মঙ্গলে, সেসবের মধ্যে অন্তত দু’টি গ্রহে নামার সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরিত হয়েছে উল্লেখ করে কিলিক বলেন, ‘যেসব আবর্জনা ইতোমধ্যে গ্রহটিতে জমেছে, সেসবের কারণে আগামী অভিযানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।’
‘তাছাড়া বর্তমানে নাসার যে পারসিভিয়ারেন্স রোবটটিকে বর্তমান মঙ্গল অভিযানে পাঠানো হয়েছে, গতিপথে আবর্জনার সঙ্গে ধাক্কা লাগলে সেটিরও ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।’
এসএমডব্লিউ