খেরসন, ঝাপোরিজ্জিয়া, দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক— ইউক্রেনের এই চার প্রদেশকে রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার যাবতীয় প্রস্তুতির কাজ শেষ। আগামী শুক্রবার এসব প্রদেশকে রুশ ভূখণ্ডের অংশ হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

বৃহস্পতিবার রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের প্রেস সেক্রেটারি ও মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ মস্কোতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। অভিযান শুরুর আগে পুতিন বলেছিলেন ইউক্রেনকে নাৎসীমুক্ত ও নিরস্ত্র করা এবং দেশটির স্বাধীনতাকামী দুই প্রদেশ দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বীকৃতি দিতেই এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।

পরে অবশ্য দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের রুশভাষী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা জানান, স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির বদলে তারা রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্ত হতেই অধিক আগ্রহী।

৯ মাসের অভিযানে খেরসন, ঝাপোরিজ্জিয়া, দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়েছে রুশ বাহিনী। শতকরা হিসেবে এই চার প্রদেশের সম্মিলিত আয়তন ইউক্রেনের মোট আয়তনের ১৫ শতাংশ।

রুশ বাহিনীর অধিকৃত এই চার প্রদেশ রাশিয়ার সঙ্গে যোগ দিতে আগ্রহী কিনা— গত ২৩ সেপ্টেম্বর সে সম্পর্কিত গণভোটও হয়েছে এসব প্রদেশে। সেই গণভোটে রাশিয়ার পক্ষে ভোট পড়েছে ৯৬ শতাংশ।

গণভোটের পর থেকেই মস্কোর পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা চলছিল আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে। বৃহস্পতিবার পেসকভের সংবাদ সম্মেলনে সমাপ্তি ঘটল সেসব আলোচনার।

সংবাদ সম্মেলনে পেসকভ বলেন, শুক্রবার মস্কোর ঐতিহাসিক রেড স্কয়্যারে ইউক্রেনের চার প্রদেশের নেতাদের সঙ্গে রাশিয়ায় যোগদান বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষর হবে। পাশপাশি সেখানে ভাষণও দেবেন পুতিন।

রাশিয়াজুড়ে সেই ভাষণ সম্প্রচারের যাবতীয় ব্যবস্থা ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া মস্কোসহ রাশিয়ার ছোট-বড় বিভিন্ন শহরে অসংখ্য বিলবোর্ডও স্থাপন করা হয়েছে। সেসব বিলবোর্ডে লেখা হয়েছে ‘দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, ঝাপোরিজ্জয়া, খেরসন— রাশিয়া।’

পুতিনের শুক্রবারের ভাষণে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে রাশিয়ার অবস্থান ও লক্ষ্য সম্পর্কে স্পষ্ট দিক নির্দেশনা থাকবে বলে উল্লেখ করেছেন পেসকভ। এছাড়া এই চার প্রদেশের যোগদান উপলক্ষে জাঁকজমকপূর্ণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ক্রেমলিনের প্রেস সেক্রেটারি।

এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে শুক্রবার ইউক্রেন জুড়ে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছেন বলে জানা গেছে। যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি ও তুরস্ক সেই মিছিলে সমর্থনও দিয়েছে।

পাশপাশি ইউক্রেনকে জন্য আরও ১১০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

সূত্র: রয়টার্স

এসএমডব্লিউ