অলৌকিক: থাইল্যান্ডে এলোপাতাড়ি গুলি থেকে যেভাবে বাঁচল এই শিশু
থাইল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এক প্রদেশে শিশুদের একটি ডে কেয়ার সেন্টারে নির্বিচার বন্দুক হামলায় হতবাক হয়ে যায় সারা বিশ্ব। দেশটির সাবেক এক পুলিশ কর্মকর্তার নির্বিচার গুলিতে গত সপ্তাহে ২২ শিশুসহ নিহত হয়েছিলেন ত্রিশের বেশি মানুষ।
অবশ্য ডে-কেয়ার সেন্টারে ২২ শিশু মারা গেলেও সেখানেই থাকা আরেক শিশু অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে যায়। সোমবার (১০ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডে-কেয়ার সেন্টারে নির্বিচার এলোপাতাড়ি হামলার সময় প্রাণে বেঁচে যাওয়া ওই শিশুর নাম অ্যামি। তার বয়স তিন বছর। ডে-কেয়ার সেন্টারে যখন হামলার ঘটনা ঘটে তখন এই শিশু সেখানেই একটি কম্বল গায়ে দিয়ে ঘুমাচ্ছিল। আর এতেই প্রাণে বেঁচে যায় সে।
বিজ্ঞাপন
মূলত ডে-কেয়ার সেন্টারে প্রবেশ করে হামলাকারী সাবেক ওই পুলিশ কর্মকর্তা যখন নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে চলেছে, তখন ঘরের এক কোণায় কাঁথা মুড়ি দেওয়া অবস্থায় ঘুমাচ্ছিল তিন বছরের এই শিশুটি। সম্ভবত সেই কারণেই হামলাকারীর চোখে পড়েনি সে। আর না-হলে থাইল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত ওই ডে-কেয়ার সেন্টারের বাকি শিশুদের মতো অ্যামিরও প্রাণ যেত।
রয়টার্স বলছে, তিন বছর বয়সী ওই শিশুর পুরো নাম পাভিনুট সুপলভং, ডাক নাম ‘অ্যামি’। বন্দুক হামলা থেকে অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া এই শিশুর বাবা-মা বলছেন, অ্যামি সাধারণত হালকা ঘুমের মানুষ। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার হামলাকারী যখন নার্সারিতে ঢুকে ২২ শিশুকে হত্যা করতে শুরু করে, তখন অ্যামি কম্বল দিয়ে তার মুখ ঢেকে ঘুমিয়ে ছিল।
আর এটিই সম্ভবত তার জীবন বাঁচিয়েছে। অ্যামির মা প্যানোম্পাই সিথং বলছেন, ‘আমি হতবাক। শিশুদের হারানো অন্য পরিবারের জন্য আমারা খারাপ লাগছে... কিন্তু আমি আনন্দিত যে আমার বাচ্চা বেঁচে গেছে। এটা দুঃখ এবং কৃতজ্ঞতার মিশ্র এক অনুভূতি।’
তার ভাষায়, ‘সেদিন খুব দ্রুত ঘুমিয়ে পড়েছিল বলেই বোধহয় মেয়েটা প্রাণে বেঁচে গেছে।’
রোববার গোটা দিনজুড়ে অ্যামিদের বাড়িতে স্থানীয় লোকদের আনাগোনা লেগেই ছিল। এত লোককে একসঙ্গে দেখে অ্যামিও ভীষণ খুশি। বাড়ির বাগানে পাড়ার অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে ছোটাছুটি করে বেড়িয়েছে সে।
তার বাবা-মা জানান, ওই দিনের ঘটনার কথা কিছুই জানে না অ্যামি। কিছুই দেখেনি সে। হামলাকারী চলে গেলে কম্বল মুড়ি দেওয়া অবস্থাতেই কেউ একজন তাকে শ্রেণিকক্ষ থেকে বাইরে বের করে আনেন। এক প্রতিবেশীর কথায়,, ‘এটা অলৌকিক ছাড়া কিছু নয়।’
অ্যামির মা-ও বলছেন, তিনি বিশ্বাস করেন অলৌকিক কোনো শক্তি তার ছোট্ট মেয়েটিকে রক্ষা করেছে।
প্যানোম্পাই বলছেন, ‘আমার বাচ্চা গভীর ঘুমের লোক নয়। আমি বিশ্বাস করি, (হামলার সময়) অলৌকিক কোনো শক্তি তার চোখ এবং কান ঢেকে রেখেছিল। আমাদের আলাদা বিশ্বাস থাকতে পারে, কিন্তু আমি মনে করি অলৌকিক শক্তিই আমার বাচ্চাকে রক্ষা করেছে।’
অন্য এক আত্মীয়ও স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, অ্যামির বেঁচে থাকা একটি ‘অলৌকিক ঘটনা’।
টিএম