ছবি: রয়টার্স

উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন একটি নতুন প্রকল্পের ঘোষণা দিয়েছেন। এই প্রকল্পের আওতায় দেশটির একটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ও পরীক্ষার স্থানে একটি বিশাল গ্রিনহাউসভিত্তিক খামার ও সেই খামারে কাজ করা লোকজনদের জন্য বাসস্থান, স্কুল, সাংস্কৃতিক ও বিনোদনকেন্দ্র তৈরি করা হবে।

দীর্ঘদিন তীব্র শীত থাকে— এমন অঞ্চলে কাঁচের তৈরি একধরনের ঘরে চাষাবাদ করা হয়। অতিরিক্ত ঠাণ্ডার হাত থেকে শাকসবজির গাছ রক্ষা করতে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।

উত্তর কোরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় জেলা হামজুর রায়োনফোয় ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে এই গ্রিনহাউসভিত্তিক খামার প্রকল্পের কাজ। তবে সেটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে সোমবার।

একসময় এটি উত্তর কোরিয়া বিমানবাহিনীর ঘাঁটি রায়োনফো। ২৮০ একর জায়গাজুড়ে ছিল এই ঘাঁটি। পরে এই স্থানটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছিল। গত বছর পর্যন্ত ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কাজ চলেছে রায়োনফোয়।

সোমবার ছিল উত্তর কোরিয়ার একমাত্র রাজনৈতিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এই উপলক্ষ্যে সেদিন দেশজুড়ে ঘোষণা করা হয়েছিল সরকারি ছুটি এবং রায়োনফোতে আয়োজন করা হয়েছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন কিম জং উন।

ইতোমধ্যে রায়োনফোতে কয়েকটি গ্রিনহাউসের সারি তৈরি করা হয়েছে, সেসব গ্রিনহাউসে বিভিন্ন শাকসবজির চাষও শুরু হয়েছে। সোমবার সেখানে উপস্থিত হয়ে কিম বলেন, পুরো এলাকায় ৮৫০টি সারি তৈরি করা হবে এবং দেশি-বিদেশি বিভিন্ন শাকসবজি, ফলমূল ও শস্যের চাষ হবে এসব গ্রিনহাউসে।

এছাড়া এসব গ্রিনহাউসে উৎপাদন পুরোমাত্রায় শুরু করতে কৃষিকাজ ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করতে দ্রুত ১ হাজার মানুষ নিয়োগ দেওয়া হবে এবং হাউসের আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় তাদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে বলে উল্লেখ করেন কিম। কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য হাউসের আশপাশের এলাকায় স্কুল, সাংস্কৃতিক ও বিনোদন কেন্দ্র তৈরি করা হবে বলেও জানান তিনি।

কিম বলেন, ‘সরকার দেশের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও গ্রামীন জীবনের উন্নয়নকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প। যদি এই প্রকল্প সফল হয়, সেক্ষেত্রে দেশের বিভিন্ন গ্রামীন এলাকায় এরকম আরও প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে।’

‘দেশের কৃষি উৎপাদন বাড়াতে হলে বিজ্ঞানসম্মত চাষপদ্ধতি ও বড় খামারের কোনো বিকল্প নেই.’ ভাষণে বলেন উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা।

অবশ্য রায়োনফোর এই প্রকল্পটিই উত্তর কোরিয়ার প্রথম গ্রিনহাউস প্রকল্প নয়। ২০১৯ সালে উত্তর কোরিয়ার উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় জেলা কিয়ংসংয়ের জুয়াংফিয়ং এলাকায় নিজস্ব প্রযুক্তিতে প্রথম গ্রিনহাউস তৈরি করে উত্তর কোরিয়া।

আয়তনে রায়োনফোর তুলনায় কিছুটা ছোটো জুয়াংফিয়ং গ্রিনহাউসে কৃষি উৎপাদন বেশ ভালভাবেই চলছে বলে জানিয়েছে উত্তর কোরিয়ার সরকারি বার্তাসংস্থা কেসিএনএ।

সূত্র: রয়টার্স

এসএমডব্লিউ