চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে ‘স্বৈরতান্ত্রিক বিশ্বাসঘাতক’ উল্লেখ করে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল রাজধানী বেইজিংসহ দেশটির ছোট-বড় বিভিন্ন শহরে। তবে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খুব দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা অবশ্য মিছিল বা স্লোগান ধরেননি ন, তবে রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরের সড়কে ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। পাশাপাশি বেইজিংয়ের বিভিন্ন স্থানেও শি জিনপিংয়ের নিন্দা জানিয়ে টানানো হয়েছে ব্যানার।

কোনো ব্যানারে লেখা হয়েছে, ‘আমরা আর কোভিড টেস্ট চাই না, খেয়ে পরে বাঁচতে চাই। আর লকডাউন নয়, আমাদের মুক্তভাবে চলাচল করতে দাও।’

আবার কোনো ব্যানারে লেখা, ‘স্বৈরতান্ত্রিক বিশ্বাসঘাতক শি জিনপিংকে উৎখাত করতে করতে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলব আমরা।’

চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব ব্যানার ও বিক্ষুব্ধ জনতার অবস্থান নেওয়ার ছবি ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। পুলিশ অবশ্য ইতোমধ্যেই সড়কে অবস্থান নেওয়া আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ, অপসারণ করা হয়েছে বেশিরভাগ ব্যানারও।

কমিউনিস্ট শাসনব্যবস্থার দেশ চীনে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ বেশ বিরল। তার ওপর এমন এক সময়ে এই বিক্ষোভ হচ্ছে, যখন ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি ২০তম সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

বেইজিংভিত্তিক সাংবাদিক স্টিফেন ম্যাকডনেল জানিয়েছেন, চীনের সাধারণ জনগণ আশা করেছিল— আসন্ন কংগ্রেসে বিতর্কিত ‘জিরো কোভিড নীতি’ থেকে সরে আসার ঘোষণা দেবে সরকার। কিন্তু গতকাল বুধবার চীনের রাষ্ট্রাত্ব সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ‘করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে কোনো প্রকার পরিবর্তন বা ছাড়ের পরিকল্পনা নেই সরকারের।’

সরকারের এই অবস্থান জানার পর স্বাভাবিকভাবেই হতাশ হয় দেশটির জনগণ। মূলত তাদেররই একটি অংশ প্রতিবাদী ব্যানার টানানো এবং সড়কে অবস্থান নিয়েছিল।

বিশ্বের প্রায় সব দেশ চলতি বছরের শুরু থেকেই করোনা বিষয়ক কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা বন্ধ করে দিয়েছে, কিন্তু একমাত্র ব্যতিক্রম চীন। ‘জিরো কোভিড’ নীতির আওতায় এখনও দেশের অভ্যন্তরে দীর্ঘমেয়াদী লকডাউন, জনগণের চলাচল ও ঘোরাঘুরির ওপর বিধিনিষেধ জারি ও করোনা টেস্ট বিষয়ক কড়াকড়ি জারি রেখেছে।

চীন সরকারের দাবি, ‘জিরো কোভিড’ নীতি অবলম্বন করলেই চীন থেকে করোনা নির্মূল সম্ভব। তবে জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিশ্বের প্রায় সব স্বাস্থ্য নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য— চীন সরকারের এই নীতি ভুল।

এদিকে, মাত্রাতিরিক্ত কড়াকড়ি ও জিরো কোভিড নীতির কারণে মন্থর হয়ে পড়েছে দেশটির অর্থনীতির চাকা। জনজীবনেও নেমে এসেছে দুর্ভোগ।

এসএমডব্লিউ