বিপুল অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে যুক্তরাজ্যের সাবেক সামরিক পাইলটদের প্রলুব্ধ করছে চীন। মূলত চীনের সশস্ত্র বাহিনীর কাছে দক্ষতা বিনিময় করার জন্য সাবেক ব্রিটিশ সামরিক পাইলটদের বিপুল অর্থের প্রলোভন দিচ্ছে এশিয়ার পরাশক্তি এই দেশটি।

এতে অনেকটা সফলও হয়েছে চীন। যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও পশ্চিমা কর্মকর্তারা এই দাবি করেছে। মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের বিপুল অর্থের প্রলোভনে সাবেক ব্রিটিশ পাইলটরা সাড়া দিচ্ছেন এবং ৩০ জনের মতো যুক্তরাজ্যের সামরিক পাইলট ইতোমধ্যেই চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিতে দেশটিতে গিয়েছিলেন বলে মনে করা হয়।

বিবিসি বলছে, সাবেক ব্রিটিশ সামরিক পাইলটদের চীনা সামরিক বাহিনীর হয়ে কাজ করার বিরুদ্ধে সতর্ক করার জন্য একটি গোয়েন্দা সতর্কতা জারি করছে যুক্তরাজ্য। এই ধরনের পাইলটদের খুঁজে বের করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং সম্প্রতি তা আরও জোরালো করা হয়েছে বলেও পশ্চিমা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের (এমওডি) একজন মুখপাত্র বলেছেন, (অর্থের বিনিময়ে) প্রশিক্ষণ এবং পাইলটদের নিয়োগ যুক্তরাজ্যের বর্তমান কোনো আইনের লঙ্ঘন করে না। তবে যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য দেশের কর্মকর্তারা এই কার্যকলাপকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

পশ্চিমা একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এটি একটি লাভজনক প্যাকেজ যা লোকেদের জন্য দেওয়া হচ্ছে। অর্থ সবার জন্যই একটি শক্তিশালী প্রেরণা। এমনকি কিছু প্যাকেজ ২ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলারের মতো বলেও মনে করা হয়।’

বিবিসি বলছে, পশ্চিমা যুদ্ধবিমান এবং পাইলটরা যেভাবে কাজ করে তা বোঝার জন্য অবসরপ্রাপ্ত ব্রিটিশ পাইলটদের ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব তথ্য তাইওয়ানের মতো কোনো সংঘর্ষের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

একজন পশ্চিমা কর্মকর্তা বলেন, ‘চীনা বিমান বাহিনীর কৌশল এবং সক্ষমতা বিকাশে সাহায্য করার জন্য চীন পশ্চিমা সামরিক পাইলটদের দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা গ্রহণ করছে।’

২০১৯ সালে সাবেক সামরিক পাইলট নিয়োগের অল্প সংখ্যক ঘটনা সম্পর্কে প্রথম জানতে পারে যুক্তরাজ্য। এরপর বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি দেখা দেয় এবং এতে করে চীনের সেই প্রচেষ্টায় ধীরগতি আসে। কারণ মহামারির মধ্যে চীনে ভ্রমণ প্রায় অসম্ভব ছিল। কিন্তু মহামারির প্রকোপ কমে আসার পর এখন আবার সেই প্রচেষ্টা বেড়েছে। ফলে এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

একজন পশ্চিমা কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ‘চীনের এই প্রচেষ্টায় আমরা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছি। এটি একটি চলমান বিষয়। বর্তমান কর্মরত সামরিক কর্মীদেরও টার্গেট করা হচ্ছে কিন্তু তাদেরও কেউই সেসব প্রস্তাব গ্রহণ করেনি বলেই মনে করা হচ্ছে।’

টিএম