কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে দফায় দফায় ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের পর এবার দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তে ব্যাপক গোলা নিক্ষেপ করেছে উত্তর কোরিয়া। মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) রাতে দেশটির পূর্ব এবং পশ্চিম উপকূল লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণের এই ঘটনা ঘটে।

এদিকে উত্তর কোরিয়ার এই ধরনের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। উত্তেজনা কমাতে ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত সামুদ্রিক ‘বাফার জোন’ লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করে দেশটি। বুধবার (১৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিয়ংইয়ং সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে নাটকীয়ভাবে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ এবং সামরিক মহড়া বাড়িয়েছে। সিউল ও ওয়াশিংটনের সন্দেহ, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন সপ্তম বারের মতো পারমাণবিক পরীক্ষা করতে চলেছেন।

দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়া মঙ্গলবার রাতে দুই দেশের সমুদ্র সীমান্তের কাছে ব্যাপক গোলা নিক্ষেপ করেছে। এই ঘটনার ঠিক একদিন আগেই ওই অঞ্চলে বার্ষিক সামরিক মহড়া শুরু করে সিউল।

দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ এক বিবৃতিতে বলেন, উত্তর কোরিয়া মোটামুটি ২৫০ রাউন্ড গোলা নিক্ষেপ করেছে। এর মধ্যে নিজের পশ্চিম উপকূলে ১০০টি এবং পূর্ব উপকূল থেকে ১৫০টি গোলা নিক্ষেপ করে পিয়ংইয়ং।

সিউল জানিয়েছে, তাদের সামরিক বাহিনী উত্তর কোরিয়াকে গোলা নিক্ষেপ বন্ধ করার জন্য কয়েকবার আহ্বান জানায়। তবে মঙ্গলবার গভীর রাতে এই ঘটনার সময় দুই পক্ষের মধ্যে সহিংসতার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

দক্ষিণ কোরিয়া বলছে, উত্তর কোরিয়ার নিক্ষেপ করা এই গোলা তাদের সামুদ্রিক অঞ্চলে পড়েনি, তবে দুই কোরিয়ার মাঝে সামুদ্রিক বাফার জোনে গিয়ে পড়েছে। এই স্থানটি নিরপেক্ষ এবং ২০১৮ সালে স্থাপন করা হয়। মূলত দুই কোরিয়ার মধ্যকার প্রত্যক্ষ সংঘাত কমিয়ে আনার জন্য সমঝোতার মাধ্যমে তা স্থাপন করা হয়।

গত শুক্রবারের পর এ নিয়ে উত্তর কোরিয়া দ্বিতীয় দফায় বাফার জোনে গোলা নিক্ষেপ করলো। সেদিন এই স্থানটিতে উত্তর কোরিয়া শত শত গোলা নিক্ষেপ করেছিল।

দক্ষিণ কোরিয়ার জেসিএস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘উত্তর কোরিয়াকে অবিলম্বে তাদের কর্মকাণ্ড বন্ধ করার জন্য জোরালোভাবে আহ্বান জানাচ্ছি আমরা। উত্তর কোরিয়ার ক্রমাগত উস্কানিমূলক এসব কর্মকাণ্ড কোরীয় উপদ্বীপ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে ক্ষুণ্ন করে।’

অন্যদিকে পিয়ংইয়ং বুধবার বলেছে, সীমান্ত বরাবর ‘উত্তর (কোরিয়ার) বিরুদ্ধে শত্রুদের যুদ্ধ মহড়া’ মোকাবিলা করার লক্ষ্যেই গোলা নিক্ষেপ করা হয়েছে।

টিএম