যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের পদ নিয়ে অশ্চিয়তার মধ্যেই পদত্যাগ করলেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রেভারম্যান। স্থানীয় সময় বুধবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে পদ ছাড়েন তিনি।

এ নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে লিজ ট্রাস সরকারের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী পদত্যাগ করলেন। এছাড়া সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ারটেংকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন ট্রাস। বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত সুয়েলা সম্প্রতি ভারতীয়দের নিয়েই বিতর্কিত মন্তব্য করেন। তিনি দাবি করেছিলেন, ‘ভিসার মেয়াদের চেয়ে বেশি সময় থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা ভারতীয়দের ক্ষেত্রেই সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।’

এর ফলে ভারত সরকারের সমালোচনার শিকার হয় ব্রিটেন। ভারত-ব্রিটেন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন দেখা দেয়। এছাড়া বুধবার হাউস অব কমন্সে সুয়েলা ব্রেভারম্যান ব্রিটেনে সাম্প্রতিক ধর্মঘটের জন্য লেবার পার্টিকে দায়ী করায় প্রবল হাসাহাসি হয়।

ব্রেভারম্যান বলেছেন, তিনি একজন সহকর্মীকে অফিসিয়াল নথি পাঠানোর জন্য তার ব্যক্তিগত ইমেইল ব্যবহার করার পরে পদত্যাগ করেছেন। এটিকে সরকারি নিয়মের ‘প্রযুক্তিগত লঙ্ঘন’ হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। ব্রেভারম্যান তার পদত্যাগপত্রে লিখেছেন: ‘আমি একটি ভুল করেছি; আমি দায় স্বীকার করছি; আমি পদত্যাগ করেছি।’

সংবাদমাধ্যম বলছে, সুয়েলা লিজ ট্রাসের কাছে নিজের ভুলের কথা স্বীকার করেছেন। তবে পদত্যাগের আগে সরকারের সঙ্গে নিজের মতবিরোধের কথাও বলেছেন তিনি। তার দাবি, নির্বাচনী ইস্তেহারে থাকা অধিকাংশ প্রতিশ্রুতিই পূরণ করতে পারছে না লিজ ট্রাসের সরকার।

এদিকে ব্রেভারম্যানের পদত্যাগের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সাবেক পরিবহনমন্ত্রী গ্রান্ড শ্যাপস সুয়েলা ব্রেভারম্যানের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন বলে লিজ ট্রাসের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে। শ্যাপস ‘ব্রিটিশ জনগণের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা’ অর্জনের জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

অবশ্য সুয়েলা ব্রেভারম্যানের পদত্যাগের পর গ্র্যান্ট শ্যাপসের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনাই ছিল সবচেয়ে বেশি। কনজারভেটিভ পার্টির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার দৌড়ে গ্র্যান্ট শ্যাপস ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাককে সমর্থন করেছিলেন।

গ্র্যান্ট শ্যাপস স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব নিলে এ নিয়ে দ্বিতীয় কোনো সুনাক-সমর্থক ট্রাস সরকারে অন্তর্ভুক্ত হবেন। এছাড়া বর্তমান অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্টও সুনাককে সমর্থন করেছিলেন।

শ্যাপস বলছেন, তিনি স্বীকার করছেন যে, ট্রাসের সরকার ‘খুব কঠিন সময়’ পার করছে। তবে নতুন অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্ট ‘মিনি বাজেট সম্পর্কিত সমস্যাগুলো নিষ্পত্তি করার জন্য দুর্দান্ত কাজ করেছেন।’

টিএম