এক সময় চিঠি পাঠিয়ে ডাকাতি করত ডাকাতের দল। এই নিয়ে গ্রাম বাংলায় বহু গল্প প্রচলিতও রয়েছে। তবে আধুনিক প্রযুক্তির এই যুগে পুরোনো পদ্ধতি অবলম্বন করে একের পর এক চুরি! ঘটনা সামনে আসতেই তদন্তে নেমে এক চোরকে আটক করেছে পুলিশ।

চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, গত কয়েকদিন ধরে জলপাইগুড়ির রাজবাড়ি পাড়া, ওয়াকার গঞ্জ, টোপামারিসহ বিভিন্ন এলাকার কয়েকটি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটছিল।

প্রতিটি বাড়ি থেকে টাকা কিংবা স্বর্ণালঙ্কারসহ অন্যান্য জিনিস তেমন ভাবে চুরি না হলেও চুরি হয় বাড়ির দলিল, বার্থ সার্টিফিকেট, অ্যাডমিট কার্ড, ভোটার কার্ড, প্যানকার্ড, আধার কার্ডসহ অন্যান্য মূল্যবান ডকুমেন্টস।

অদ্ভুত ভাবে চুরির পরদিন ওই বাড়িগুলোতে একটি করে চিঠি আসতে থাকে। খামে ভরা সেই চিঠিতে কারও কাছে ১ লাখ আবার কারও কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করে চিঠি পাঠায় চোর।

এর মধ্যে একটি চিঠিতে চোর লেখে, ‘স্পোর্টস কমপ্লেক্সের কাছে নতুন ব্রিজের পাশে একটি কুল গাছ রয়েছে। সেখানে একটি ব্যাগে আপনার ডকুমেন্টস রাখা আছে। আপনার হারিয়ে যাওয়া ডকুমেন্টস ফেরত পেতে চাইলে আপনি টাকা নিয়ে চলে আসুন। কোনও রকম চালাকি করলে ঝামেলায় পড়বেন।’

চিঠি পাওয়ার পর বাড়ির ভুক্তভোগীরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। অভিনব চুরির ঘটনায় নড়েচড়ে বসে পুলিশ। এরপর তদন্তের দায়িত্ব পড়ে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার সাদা পোশাকের পুলিশের ওপর। দায়িত্ব পেয়ে তদন্তে নামেন পুলিশ কর্মকর্তা অরিজিৎ কুণ্ডু। এরপর সূত্র ধরে চোরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার কর্মকর্তা অরিজিৎ কুণ্ডু বলেন, ‘তদন্তে নেমে আমরা জানতে পারি নির্দিষ্ট একজন অটো চালকের মাধ্যমে প্রতিটি বাড়িতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। প্রথমে আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে চোরের নাম জানতে পারি। এরপর আমরা অভিযান চালিয়ে সুদীপ রায় নামে যুবককে গ্রেপ্তার করি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে দোষ স্বীকার করে সুদীপ। পরিকল্পনা করে ঠান্ডা মাথায় এই কাজ করেছে সে।’

এই ঘটনায় জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি অর্ঘ্য সরকার জানান, ‘সুদীপ রায় একজন দাগী চোর। তার বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি এই অভিনব কায়দায় চুরি করা শুরু করেছিল। আমরা তাকে গ্রেপ্তার করে হেফাজতে নিয়েছি।’

সূত্র: টিভি৯ বাংলা

টিএম