হংকংয়ের নির্বাচনী ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো এবং আইনসভার সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে বেইজিংয়ের ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ নিয়ে প্রণীত চীনের নতুন প্রস্তাবের তীব্র সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বেইজিংয়ের এই প্রস্তাবিত আইনকে হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসনের ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ বলেও উল্লেখ করেছে দেশটি।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (৫ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস সাংবাদিকদের বলেন, ‘চীনের এই প্রস্তাবিত আইন হংকংয়ের স্বাধীনতা, স্বায়ত্তশাসন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ। একইসঙ্গে দেশটির এই পদক্ষেপ ‘হংকং’স ব্যাসিক ল’-এরও পরিপন্থি।’

‘হংকং’স ব্যাসিক ল’ বা হংকংয়ের মৌলিক আইন- ভূখণ্ডটির মিনি সংবিধান হিসেবে পরিচিত। ১৯৯৭ সালে ব্রিটেন হংকংয়ের দায়িত্ব চীনের কাছে হস্তান্তর করার সময় অঞ্চলটিতে এই আইন কার্যকর হয়েছিল।

প্রাইস বলেন, ‘এই আইন বাস্তবায়ন করা হলে হংকংয়ের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং এসব পদক্ষেপ মূলত অঞ্চলটির মৌলিক আইনে থাকা বিধানগুলোর পুরোপুরি বিপরীত।’

আর তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আপত্তি বিবেচনায় নিয়ে মৌলিক আইন অনুযায়ী হংকংয়ের শাসনভার পরিচালনা করতে চীনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র হংকংয়ের মানুষের পাশে আছে। তারা কেবল তাদের অধিকারটাই চাচ্ছে, আর কিছু নয়। কিন্তু তারা বঞ্চিত হচ্ছে।’

উল্লেখ্য, শুক্রবার হংকংয়ের নির্বাচনী ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর ঘোষণা দেয় চীন। দেশটির দাবি- দেশপ্রেমিকদের হাতেই যেন হংকংয়ের দায়িত্ব থাকে; এটা নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চীনের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সমাবেশ ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের (এনপিসি) সম্মেলনে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

নতুন যে আইন প্রণয়ন করা হবে, সেখানে রাজনৈতিক কার্যকলাপ কাকে বলা হবে, তার নতুন করে ব্যাখ্যা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে। রাজনৈতিক প্রচারও কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। আর বর্তমান বিতর্কিত নিরাপত্তা আইন অনুসারে গণতন্ত্রপন্থি কর্মীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।

এনপিসি’র ভাইস চেয়ারম্যান ওয়াং চেন বলেন, হংকংয়ের নির্বাচনী ব্যবস্থাপনায় কিছু ত্রুটি রয়েছে; যার কারণে বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীরা ভূখণ্ডটির স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলছেন। তার মতে, এই ‘ঝুঁকি’ দূর করা প্রয়োজন। এছাড়া হংকংয়ে ‘গণতান্ত্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থা’ প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সূত্র: এএফপি

টিএম