যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি বর্তমানে গত ৪১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। খাদ্য, জ্বালানিসহ যাবতীয় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে লাগামহীন হারে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই দেশটিতে চলছে আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রস্তুতির কাজ।

বুধবার ব্রিটেনের জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তর (ওএনএস) থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে— চলতি বছর খুচরা বাজারে খাদ্য, গৃহস্থালী কাজে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ, জ্বালানিসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ১১ দশমিক ১ শতাংশ। ১৯৮১ সালের অক্টোবরের পর এত অধিক মূল্যস্ফীতি দেখেননি ব্রিটেনবাসী। 

তবে ওএনএসের মতে, সরকার ভোক্তাপর্যায়ে গৃহস্থালীতে ব্যবহৃত বিদ্যুতের বাৎসরিক বিল ২ হাজার ৫০০ পাউন্ড (২ হাজার ৯৬০ ডলার) বেঁধে দেওয়ায় মুদ্রাস্ফীতি এই পর্যায়ে রয়েছে। যদি এ পদক্ষেপ না নেওয়া হতো, সেক্ষেত্রে অক্টোবরের মূল্যস্ফীতি পৌঁছাত ১৩ দশমিক ৮ শতাংশে।

গত অর্থবছরের শুরুতে মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে সরকারের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ শতাংশ বা তার কিছু বেশি। সেখানে এটি দুই অঙ্ক স্পর্শ করে ফেলায় সঙ্গত কারণেই ব্যাপক চাপে পড়েছে ব্রিটেনের সরকার।

যুক্তরাজ্যের পরিসংখ্যান বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, দেশটিতে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বাড়ছে খাদ্যপণ্য ও অ্যালকোহলমুক্ত পানীয়ের মূল্য। বর্তমানে যে গতিতে খাদ্য ও পানীয়ের দাম বাড়ছে, ১৯৭৭ সালের পর থেকে এমন দেখা যায়নি।

ভোক্তাপর্যায়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন দেশটির নিম্ন আয়ের লোকজন। কারণ তাদের উপার্জনের বড় অংশই ব্যয় হয় আবাসন নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রী ক্রয়ে।

দেশের এই ব্যাপক অর্থনৈতিক চাপের মধ্যেই আগামী অর্থবছরের জন্য বাজেট ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্ট।    

পরিসংখ্যান দপ্তরের বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় বুধবার সাংবাদিকদের হান্ট বলেন, ব্রিটেনের অর্থনীতিকে রক্ষার স্বার্থে প্রয়োজনে ‘কঠিন কিন্তু জরুরি’ পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত সরকার।

‘অর্থবছরের শুরুতে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড (যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংক) মূল্যস্ফীতির যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল, সেই লক্ষ্যে আমাদের ফিরে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। সেজন্য কঠিন কিন্তু জরুরি কোনো পদক্ষেপ নিতে হয়, তাহলে তাতেও আমাদের সরকার প্রস্তুত,’ বুধবার সাংবাদিকদের বলেন হান্ট।

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ