যুগ বদলেছে। কিন্তু জাত-পাত-বর্ণ নিয়ে বৈষম্য এখনও ঘোচেনি। আর তাইতো এক দলিত নারী গ্রামের একটি পানীয় ট্যাংক থেকে পানি পান করায় শুরু হলো হইচই। ট্যাংকটি থেকে পানি বের করে সেটি পরিষ্কার করা হলো।

শুধু তাই নয়, গোমূত্র দিয়ে সেই ট্যাংক শুদ্ধ করা হলো। শুনতে অবাক লাগলেও বর্তমান যুগে এমনই ঘটনা ঘটেছে ভারতের কর্নাটক প্রদেশের ছমরাজনগর জেলার হেগ্গোতারা গ্রামে। সোমবার (২১ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

মূলত কর্নাটকের বিভিন্ন গ্রামে আজও দলিত-ব্রাহ্মণ জাতি-বৈষম্য বিশেষভাবে পালন করে সেখানকার মানুষ। এবার রাজ্যটির হেগ্গোতারা গ্রাম সেই বর্ণ বৈষম্যেরই একটি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠল। মূলত ছমরাজনগর জেলার হেগ্গোতারা গ্রামের প্রতিটি ট্যাংকের গায়ে বড় বড় করে লেখা রয়েছে, এখান থেকে সকলে পানি পান করতে পারেন। কিন্তু, আদতে যে সেটি মেনে চলা হয় না, তারই নজির মিলল দলিত নারী পানি পান করার পর।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, তফসিলি সম্প্রদায়ভুক্ত ওই দলিত নারী গত ১৮ নভেম্বর কর্নাটক প্রদেশের ছমরাজনগর জেলার হেগ্গোতারা গ্রামে একটি বিয়ে বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেই সময়ই তিনি গ্রামের একটি পানীয় জলের ট্যাংকের কল খুলে পানি পান করেন। এই ঘটনাটি গ্রামের উচ্চবর্ণের অনেকে দেখে ফেলেন।

আর এরপরই গ্রামের মোড়লরা রীতিমতো আলোচনা করে ট্যাংকের সকল পানি ফেলে দিয়ে সেটি পরিশুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন। কেননা তাদের মতে, দলিত নারী ট্যাংকের পানি পান করায় সেটি অপবিত্র হয়ে গেছে। তাই কেবল ট্যাংকের সব পানি ফেলেই তারা ক্ষান্ত হননি, ট্যাংকে গোমূত্র ঢেলে সেটি পবিত্র করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।

যদিও গ্রামের তহসিলদার আই.ই বসব্রজ বলেন, ‘পানির ট্যাংক পরিষ্কার করা হয়েছে। তবে গোমূত্র দিয়ে সেটি পরিষ্কার করা হয়েছে কিনা ঠিক জানা নেই।’

তিনি আরও দাবি করেন, কোনও নারীকে ওই ট্যাংক থেকে পানি পান করতেও দেখা যায়নি। ভুক্তভোগী নারীর খোঁজ পাওয়া গেলে এবং সেরকম কোনও ঘটনা ঘটে থাকলে গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে বলেও দাবি করেছেন তিনি।

তবে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনও মামলা দায়ের হয়নি।

টিএম