কাতার বিশ্বকাপ ফুটবলে মঙ্গলবার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, এ ম্যাচের আগে নিজ দেশের ফুটবলারদের হুমকি দিয়েছে ইরানি বিপ্লবী গার্ড কর্পস (আইজিআরসি)। তাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, যদি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ম্যাচে তারা জাতীয় সংগীতের সঙ্গে ঠোঁট না মেলানোসহ ‘অপ্রীতিকর’ কোনো কিছু করেন তাহলে তাদের পরিবারের সদস্যদের জেলে নেওয়া ও নির্যাতন করা হবে।

সিএনএন মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে আরও জানিয়েছে, ইরান নিজেদের প্রথম ম্যাচে গত ২১ নভেম্বর ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়। সেই ম্যাচে বিক্ষোভকারীদের সমর্থনে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে ঠোঁট মেলাননি দেশটির খেলোয়াড়রা। এ ঘটনার পর দলের সকলের সঙ্গে কাতারে আলাদাভাবে বৈঠকে বসেন বিপ্লবী গার্ড কর্পসের কর্মকর্তারা। একটি সূত্র জানিয়েছে, খেলোয়াড়দের বলা হয়েছে, যদি তারা জাতীয় সংগীতকে অবমাননা করেন এবং বিক্ষোভকারীদের সমর্থনে কোনো কিছু করেন তাহলে তাদের পরিবারের সদস্যদের নির্যাতন করা হবে।

সূত্রটি আরও জানিয়েছে, বিপ্লবী গার্ডের কয়েক ডজন কর্মকর্তা এখন কাতারে অবস্থান করছেন এবং তারা খেলোয়াড়দের ওপর নজরদারি চালাচ্ছেন। ইরানি খেলোয়াড়ের বিদেশিদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে গার্ডের পক্ষ থেকে।

এমন হুমকির পর শুক্রবার ওয়েলসের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে ঠোঁট মেলান খেলোয়াড়রা। ওই ম্যাচে ওয়েলসেক ২-০ গোলের ব্যবধানে হারায় ইরান।

এ সূত্রটি আরও জানিয়েছে, খেলোয়াড় ও তাদের পরিবারকে হুমকি দেওয়ার পর বিপ্লবী গার্ড কর্পস কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাদভাবে বৈঠক করেছেন ইরানের কোচ কার্লোস কুইরোজ। তবে কোচের সঙ্গে কর্মকর্তাদের কি কথা হয়েছে সেটি জানা যায়নি। কিন্তু কোচ জানিয়েছেন, ফিফার নিয়মের মধ্যে খেলোয়াড়রা চাইলে যে কোনো ধরনের প্রতিবাদ জানাতে পারবেন।

সূত্রটি আরও জানিয়েছে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে খেলতে নামার আগে খেলোয়াড়দের ‘দামি উপহার ও গাড়ি’ দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছিল ইরান সরকার। কিন্তু যখন ম্যাচে তারা জাতীয় সংগীতের সঙ্গে ঠোঁট মেলাননি তখন তাদের হুমকি দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া ইংল্যান্ড ম্যাচে এমন কাণ্ডের পর ওয়েলসের বিপক্ষে ম্যাচে মাঠে ভুয়া সমর্থক পাঠানোর অভিযোগও ওঠেছে ইরানের সরকারের বিরুদ্ধে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ম্যাচেও এমন কথিত ভুয়া সমর্থক পাঠানোর পরিকল্পনা করছে তারা। যারা মাঠে জাতীয় দলের সমর্থনে বিভিন্ন স্লোগান দেবেন।

এদিকে ইরান এমন সময় বিশ্বকাপ খেলতে এসেছে যখন দেশটি হিজাববিরোধী আন্দোলনে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এ আন্দোলন এখন পর্যন্ত চারশরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

সূত্র: সিএনএন

এমটিআই