পরিপাটি সাজানো-গোছানো স্পেনের ভ্যালেন্সিয়া শহর

উন্নত জীবন ও বাড়তি আয়ের আশায় নিজ দেশ ছেড়ে প্রবাসে পাড়ি জমান অসংখ্য মানুষ। বিশেষ করে উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশগুলো থেকে দূরের দেশগুলোতে যান অনেকে। এতে অনেকের কপাল খুলে।

তবে আবারও কেউ কেউ খালি হাতেও ফিরে আসেন। পরিবেশ পরিস্থিতি ভালো না থাকার কারণে নিজেকে দূর প্রবাসে মানিয়ে নিতে পারেন না তারা। হতাশ হয়ে যেন ফিরে আসতে না হয় সেজন্য প্রবাসে পাড়ি দেওয়ার আগে সেখানকার পারিপার্শ্বিক অবস্থা জেনে নেওয়া ভালো।    

পরিবেশ, যোগাযোগ, বিনোদন, আর্থসামাজিক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে প্রবাসীদের জন্য বিশ্বের কোন দশটি শহর ভালো এবং কোন দশটি শহর ভালো নয় সেটির একটি তালিকা প্রকাশ করেছে ইন্টারনেশন।

সবকিছু বিবেচনা করে ইন্টারনেশন জানিয়েছে, প্রবাসীদের জন্য আদর্শ শহর হলো—  স্পেনের ভ্যালেন্সিয়া। দ্বিতীয়স্থানে রয়েছে আরব আমিরাতের দুবাই। আর তৃতীয়স্থানে আছে মেক্সিকোর রাজধানী মেক্সিকো সিটি। এরপর যথাক্রমে এ তালিকায় রয়েছে পর্তুগালের লিসবন, স্পেনের আরেক শহর মাদ্রিদ, থাইল্যান্ডের ব্যাংকক, সুইজারল্যান্ডের বাসেল, অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন, আরব আমিরাতের আবুধাবি এবং সিঙ্গাপুর সিটি।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ আরব আমিরাতের দুবাই শহরের রাতের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য

অন্যদিকে প্রবাসীদের জন্য আদর্শ নয়— এমন ১০ শহরের তালিকার সবার উপরে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ, দ্বিতীয় স্থানে জার্মানির ফ্রাঙ্কফ্রুট, তৃতীয়স্থানে ফ্রান্সের প্যারিস। এরপর এ তালিকায় যথাক্রমে রয়েছে তুরস্কের ইস্তাম্বুল, চীনের হংকং, জার্মানির হ্যামবার্গ, ইতালির মিলান, কানাডার ভ্যানকুভার, জাপানের টোকিও এবং ইতালির রোম।

ভালো এবং খারাপ ১০ শহরের তালিকা প্রকাশ করতে ইন্টারনেশন ১৮১টি দেশে বসবাসরত ১১ হাজার ৯৭০ জন প্রবাসীর ওপর জরিপ চালিয়েছে।

সেখানে বসবাসরত প্রবাসীদের মতামতের ওপর ভিত্তি করেই এ তালিকা তৈরি করা হয়েছে। জরিপে অংশ নেওয়াদের দেওয়া তথ্যে বেরিয়ে এসেছে সেসব শহরের পরিস্থিতি কেমন এবং কেনই বা ওই ২০টি শহরকে সবচেয়ে ‘ভালো এবং বাজে’ বলা হচ্ছে।

যে কারণ এই ১০টি শহর প্রবাসীদের জন্য আদর্শ—

১। ভ্যালেন্সিয়া, স্পেন : বসবাসযোগ্য, জনবান্ধব ও সাশ্রয়ী।

২। দুবাই, আরব আমিরাত : কাজ এবং অবসর সময় কাটানোর জন্য সেরা।

৩। মেক্সিকো সিটি, মেক্সিকো : জনবান্ধব এবং সাশ্রয়ী, তবে নিরাপদ নয়।

৪। লিসবন, পর্তুগাল : অত্যন্ত চমৎকার আবহাওয়া এবং জীবনমান উন্নত, মাঝারি কাজের সুযোগ আছে।

৫। মাদ্রিদ, স্পেন : অবসর সময় কাটানোর দারুণ স্থান এবং সবাই বন্ধুত্বপূর্ণ।

৬। ব্যাংকক, থাইল্যান্ড : নিরাপত্তার শঙ্কা থাকলেও প্রবাসীরা নিজ দেশেই আছেন এমন অনুভব করেন।

৭। বাসেল, সুইজারল্যান্ড : প্রবাসীরা অর্থনৈতিক অবস্থা, চাকরি এবং জীবন মান নিয়ে সন্তুষ্ট।

৮। মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া : সহজেই এ শহরের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া যায়।

৯। আবুধাবি, আরব আমিরাত : দারুণ স্বাস্থ্য এবং আমলা ব্যবস্থা।

১০। সিঙ্গাপুর, সিঙ্গাপুর : সহজ সরকার ব্যবস্থা, ভালো অর্থনৈতিক অবস্থা এবং নিজের ক্যারিয়ার সমৃদ্ধ করার সুযোগ রয়েছে।

 

যে কারণে এই ১০টি শহর প্রবাসীদের জন্য আদর্শ নয়—

১। জোহানেসবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকা : নিরাপত্তার ঘাটতির কারণে প্রবাসীদের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শহর।

২। ফ্রাঙ্কফ্রুট, জার্মানি :  ডিজিটাইজেশন, সরকার এবং ভাষা  নিয়ে সমস্যা আছে।

৩। প্যারিস, ফ্রান্স : রেস্তোরাঁ এবং বিনোদনের জন্য সেরা। কিন্তু পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় সবাই তা ভোগ করতে পারেন না।

৪। ইস্তাম্বুল, তুরস্ক : বিদেশীদের কাজ করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বাজে শহর।

৫। হংকং, চীন : হতাশাজনক পরিবেশ এবং কাজের চাপ বেশি।

৬। হ্যামবার্গ, জার্মানি : প্রবাসীরা এখানে খুশি নয়। কারণ শহরটি বন্ধুত্বপূর্ণ নয়। এখানে বন্ধু পাওয়া বেশ কঠিন।

৭। মিলান, ইতালি : অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়। কাজের পরিবেশও কঠিন।

৮। ভ্যানকুভার, কানাডা : বাড়ি ভাড়া/বাড়ির দাম অনেক বেশি এবং স্থানীয়রা বন্ধুত্বপূর্ণ নয়।

৯। টোকিও, জাপান : শহরের ব্যবস্থা বুঝতে সমস্যা। তবে জীবন মান অনেক উন্নত।

১০। রোম, ইতালি : জীবন মান উন্নত নয়। তবে এখানকার প্রবাসীদের মনে হয় তারা যেন তাদের নিজ শহরেই আছেন।

সূত্র: এনডিটিভি

এমটিআই