স্পেনের মাদ্রিদে অবস্থিত ইউক্রেনের দূতাবাসের সামনে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে দেশটির পুলিশ

ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে ইউক্রেনের দূতাবাসে অদ্ভুত বাক্স পাঠিয়েছে অজ্ঞাতরা। ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার জানিয়েছে, এই বাক্সগুলোর ভেতরটা ‘রক্তে ভেজা’ ছিল এবং এর ভেতর প্রাণীর চোখ পাওয়া গেছে। খবর বিবিসির।

এ ব্যাপারে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘হাঙ্গেরি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, অস্ট্রিয়া, স্পেনে রক্তে ভেজা বাক্স পাওয়া গেছে।’ চেক রিপাবলিকের পুলিশ জানিয়েছে তারাও এ ধরনের বাক্স উদ্ধার করেছে।

তবে কে বা কারা এসব বাক্স দূতাবাস এবং কনস্যুলেটগুলোতে পাঠিয়েছে তা নিশ্চিত নয় বলে শুক্রবারের প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।

ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা জানিয়েছেন, তার বিশ্বাস আতঙ্ক এবং ভয় সৃষ্টি করতে সুপরিকল্পিত অভিযান চালানো হচ্ছে।

মাত্র দুইদিন আগে স্পেনের মাদ্রিদে অবস্থিত ইউক্রেনের দূতাবাসে অজ্ঞাতরা পার্সেল বোমা (চিঠি বোমা) পাঠিয়েছিল। ওই বোমা বিস্ফোরণে দূতাবাসের এক কর্মী আহত হয়েছিলেন।

ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওলেগ নিকোলেঙ্কো শুক্রবার ফেসবুকে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ইউক্রেনের দূতাবাসগুলোতে বিভিন্ন ঘটনা ঘটছে। ভ্যাটিকানে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূতের বাড়ির প্রবেশদ্বারে অজ্ঞাতরা ভাংচুর চালিয়েছে, কাজাখস্তানের দূতাবাসে বোমা হামলার আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে যেটিতে ইউক্রেনের সমালোচনা করা একটি আর্টিকেলের (প্রবন্ধের) ফটোকপি ছিল।

তিনি আরও জানিয়েছেন, অন্যান্য চিঠির সঙ্গে একইসময়ে এ চিঠি ইউরোপের একটি দেশ থেকে এসেছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করতে ও শাস্তির আওতায় আনতে বিদেশি সংস্থাগুলোর সঙ্গে ইউক্রেন কাজ করছে বলেও জানান তিনি। ।  

ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, দূতাবাস ও কনস্যুলেটে পাঠানো বাক্সগুলোতে একই ধরনের তরল বস্তু ও গন্ধ ছিল।

এ নিয়ে যখন হৈ চৈ চলছিল তখনই পরবর্তীতে ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, স্পেনের মাদ্রিদে ইউক্রেনের দূতাবাসের পাশের একটি এলাকা বন্ধ করে দেয় পুলিশ। কারণ তারা পার্সেল বোমা সদৃশ্য আরেকটি বস্তুর সন্ধান পায়। এরমধ্যে চেক রিপাবলিকের পুলিশ জানায়, রাজধানী প্রাগে অবস্থিত ইউক্রেনের দূতাবাস এবং ব্রুনোর কনস্যুলেটে প্রাণীর টিস্যু সংবলিত বাক্স পাঠানো হয়েছে।

এসব ঘটনার পর দূতাবাস এবং কনস্যুলেটগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। বিশেষ করে স্পেনে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বুধবার (৩০ নভেম্বর) স্পেনের একটি সামরিক সরঞ্জামের ফার্মে পার্সেল বোমা পাঠানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। এরপর বৃহস্পতিবার দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাদ্রিদের অদূরে অবস্থিত তোরেন দে আরদোজের বিমান ঘাঁটিতেও এই ধরনের বোমা পাঠানো হয়।

স্পেনের উপস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাফায়েল পারেজ সাংবাদিকদের জানান, সব চিঠির খাম এবং ভেতরের অংশ একই রকম ছিল। এছাড়া তারা ইঙ্গিত পেয়েছেন এগুলো স্পেনের ভেতর থেকেই পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, অধিকতর তদন্তের পরই জানা যাবে এগুলোর আসল রহস্য।

সূত্র: বিবিসি

এমটিআই