তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে ২০১১ সালে সর্বশেষবার বৈঠকে বসেছিলেন বাশার আল আসাদ- ফাইল ছবি

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের মধ্যে থাকা দ্বন্দ্ব নিরসনে দুই নেতার মধ্যে বৈঠক আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছিল রাশিয়া। তবে এরদোয়ানের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছেন বাশার। খবর রয়টার্সের।

ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাশার আল-আসাদ রাশিয়াকে জানিয়েছেন, সামনে তুরস্কের নির্বাচন আসছে। এমন সময় বৈঠক করলে এরদোয়ান নির্বাচনে সুবিধা পাবেন এবং আবারও ক্ষমতায় আসবেন। আর তিনি পুনরায় নির্বাচিত হতে পারলে তুরস্কে বসবাসরত ৩৬ লাখ সিরিয়ান শরণার্থীকে ফেরত পাঠাবেন বলে আশঙ্কা সিরিয়ার।

বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি রয়টার্সকে বলেছেন, ‘কেন এরদোয়ানকে বিনামূল্যে আমরা জয় দেব? নির্বাচনের আগে কোনো বৈঠক হবে না।’

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি শরণার্থী বাস করেন তুরস্কে। সিরিয়ায় ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ বাধার পর লাখ লাখ মানুষ দেশটিতে আশ্রয় নেন। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে শরণার্থী নিয়ে তুরস্কের সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে এরদোয়ান জানিয়েছেন, স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে রাজি এমন ১০ লাখ সিরিয়ানকে ফেরত পাঠানো হবে।

সিরিয়ার আরেকটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, এরদোয়ানের সঙ্গে বাশার আল-আসাদের বৈঠক থেকে কোনো ফলাফল পাওয়া যাবে না। এছাড়া তারা যেটি চান সেটি হলো সিরিয়া থেকে তুরস্কের সব সেনাকে প্রত্যাহার করে নিতে হবে। যেটি তুরস্ক করবে না।

তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে থাকা কুর্দিদের সরিয়ে দিতে ২০১৬ সালে সিরিয়ায় সেনা পাঠায় আঙ্কারা। সে বছর বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করে তারা। এরপর ২০১৮ ও ২০১৯ সালেও তার্কিস সেনারা সিরিয়ায় অভিযান চালান। এখন নতুন অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।

সিরিয়ায় ২০১১ সালে বাশার আল-আসাদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন দেশটির সাধারণ জনগণ। ওই সময় আসাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন এরদোয়ান। এ নিয়ে দুই নেতার মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এছাড়া তুরস্ক-সিরিয়া সম্পর্কে ফাটল ধরে। তবে অর্থনৈতিক সংকটে থাকা তুরস্ক সাম্প্রতিক সময়ে আবারও সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে দামেস্ককের পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছে না আঙ্কারা।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিজে মূলত এখন বাশার আল-আসাদ এবং এরদোয়ানকে মেলাতে চাইছেন।

সূত্র: মিডেল ইস্ট আই

এমটিআই