যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনের রাজধানী সানায় একটি শরণার্থী শিবিরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে আটজন নিহত হয়েছেন। আহত মানুষের সংখ্যা ১৭০ জনের বেশি। মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। তবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি। 

ইয়েমেনের রাজধানী সানায় শরণার্থীদের জন্য তৈরি হয়েছিল বিশাল একটি শিবির। রোববার সেই শিবিরেই আগুন লেগে যায়। ঘটনাস্থলেই অন্তত আটজনের মৃত্যু ছাড়াও গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দেড় শতাধিক মানুষকে। তাদের সবার অবস্থাই আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

শরণার্থী শিবিরের প্রথম যেখানে আগুন লাগে, সেখানে প্রায় ৭০০ শরণার্থী ছিলেন। তারা সবাই সীমান্ত পেরিয়ে সৌদি আরবে কাজের খোঁজে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

তবে কীভাবে ওই শরণার্থী শিবিরে আগুন লাগলো, তা এখনো জানা যায়নি। হুথি বিদ্রোহীরা ওই শরণার্থী শিবির চালায়। শিবিরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে কিনা, তাও স্পষ্ট নয়।

সানার ওই শরণার্থী শিবিরে অগ্নিকাণ্ডের পরপরই টুইট করেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা আইওএম’র পরিচালক কারমেলা। তিনি জানিয়েছেন, আকস্মিক খবরে তিনি মর্মাহত। শরণার্থী এবং শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদেরও মৃত্যু হয়েছে। বহু মানুষ আহত। জাতিসংঘ সবাইকে সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত।

সরকারিভাবে শরণার্থী শিবিরে আটজনের মৃত্যুর কথা জানানো হলেও, বেসরকারি অনেকে সূত্র আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ও বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি। কারমেলার টুইটেও সে কথা বলা হয়েছে।

জাতিসংঘের কর্মকর্তারা মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসকে (এপি) জানিয়েছেন, শরণার্থী প্রথম যেখানে আগুন লাগে, সেখানে প্রায় ৭০০ শরণার্থী ছিলেন। তারা সবাই সীমান্ত পেরিয়ে সৌদি আরবে কাজের খোঁজে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ইয়েমেনের সরকারি কর্তৃপক্ষ তাদের গ্রেপ্তার করে শরণার্থী শিবিরে পাঠিয়েছিল।

বহু শরণার্থী ইয়েমেনের যুদ্ধের শিকারও হয়েছেন। অনেকে পাচার হয়ে গেছেন ড্রাগ মাফিয়াদের কাছে।

ডয়েচে ভেলে লিখেছে আফ্রিকা পেরিয়ে হাজার হাজার মানুষ সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে কাজের সন্ধানে যান। প্রচারক থেকে শুরু করে অফিসের হাউসকিপার— নানা ধরনের কাজের খোঁজ করেন তারা।

কিন্তু সীমান্ত পেরনোর সময় বহু মানুষ ধরা পড়েন। তাদের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ইয়েমেনের শিবিরটিও তেমনই ছিল। গত কয়েক বছরে প্রায় এক লাখ ৩৮ হাজার শরণার্থী ইয়েমেনে পৌঁছেছেন।

মহামারি করোনাভাইরাস প্রকোপের কারণে গত বছর শরণার্থীর সংখ্যাটি কমেছিল। এমন বহু শরণার্থী ইয়েমেনের যুদ্ধের শিকারও হয়েছেন। অনেকে পাচার হয়ে গেছেন ড্রাগ মাফিয়াদের কাছে।

 

এএস