লাতিন আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনার বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা ফার্নান্দেজ দে কির্চনারকে ছয় বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

৬৯ বছর বয়সী ক্রিস্টিনা ফার্নান্দেজ দুর্নীতি করে অবৈধভাবে নিজের বন্ধুকে সরকারি নির্মাণ কাজ পাইয়ে দিয়েছিলেন। এ ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয় এবং সবশেষে প্রমাণ পাওয়ায় ছয় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আর্জেন্টিনার ইতিহাসে তিনিই প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট যিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় কারাদণ্ড পেলেন।

তবে ক্রিস্টিনাকে জেল খাটতে হবে না। দেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ায় তিনি এ সুবিধা পাবেন। এছাড়া এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন তিনি। কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি আজীবনের জন্য সরকারি কোনো দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে ক্রিস্টিনাকে। যদিও বর্তমান রায়ের আপিল শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকবেন তিনি।

নিজের বিরুদ্ধে এমন রায় দেওয়ার পর ক্রিস্টিনা দাবি করেছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ হিসেবে তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ও কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আদালত রায় দেওয়ার পর নিজের প্রতিক্রিয়ায় আর্জেন্টাইন ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘বিচারবিভাগীয় মাফিয়ার’ ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন তিনি।

বিচার চলাকালীন সময়েও তিনি দাবি করেছিলেন তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন আইনজীবীরা।

ক্রিস্টিনা ২০০৭ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ওই সময় এসব দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। সরকারি কৌঁসুলিদের দাবি, প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ওই বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন ক্রিস্টিনা। যাকে ঘুষের বিনিময়ে বড় বড় সরকারি নির্মাণ কাজ পাইয়ে দিয়েছেন তিনি।

এ ঘটনায় লাজারো বায়েজ নামে এক ব্যবসায়ীকে ছয় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তিনিই ক্রিস্টিনার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে সুবিধা নিয়েছিলেন। এর আগে অর্থ পাচারের মামলায় ১২ বছরের জেল খেটেছিলেন তিনি। এখন নতুন মামলায় কারাদণ্ড দেওয়া হলো তাকে। এছাড়া এ মামলায় আরও পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদের সাজা দেওয়া হয়েছে।

সরকারি কৌঁসুলি দিয়েগো লুসিয়ানি জানিয়েছেন, ভাইস প্রেসিডেন্টের নির্বাচনী এলাকা সান্তা ক্রুজের বেশ কয়েকটি সরকারি নির্মাণ কাজ দেওয়া হয় তার বন্ধুকে। যার কিছু কাজ কখনোই শেষ হয়নি। এসব ঘটনায় আর্জেন্টিনার সরকারের ১ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে।

সূত্র: বিবিসি

এমটিআই