আফগানিস্তানে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড জনসমক্ষে কার্যকর করা হযেছে। মূলত অভিযুক্ত ব্যক্তি যাকে হত্যা করেছিল, বুধবার (৭ ডিসেম্বর) তার বাবা অভিযুক্তকে নিজ হাতে গুলি করে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে।

আফগানিস্তানে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর তালেবানদের অধীনে এটিই প্রথম প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা। বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিম ফারাহ প্রদেশের একটি জনাকীর্ণ স্টেডিয়ামে অভিযুক্ত ওই ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে বলে তালেবানের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন।

বিবিসি জানিয়েছে, তালেবান মুখপাত্রের পৃথক এক বিবৃতিতে বলা হয়, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময় নিহতের বাবা ওই ব্যক্তিকে তিনবার গুলি করেছিলেন। এছাড়া তালেবানের কয়েক ডজন নেতা মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে আফগানিস্তানের বিচারকদের শরিয়া আইন পুরোপুরি কার্যকর করার নির্দেশ দেয় তালেবান। আর সেই নির্দেশনার কয়েক সপ্তাহ পরই এই ঘটনা সামনে এলো।

বিবিসি বলছে, তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা গত মাসে একটি আদেশ জারি করেছিলেন। সেখানে তিনি বিচারকদের এমন শাস্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন যাতে জনসমক্ষে মৃত্যুদণ্ড, প্রকাশ্যে অঙ্গচ্ছেদ এবং পাথর মারার মতো শাস্তি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

তবে সঠিক অপরাধ এবং সংশ্লিষ্ট শাস্তি আনুষ্ঠানিকভাবে সংজ্ঞায়িত করেনি তালেবান।

তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, বুধবার সকালের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় ফারাহ প্রদেশের একটি খেলার মাঠে এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। সেখানে শত শত দর্শকের মধ্যে উপ-প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

তালেবানের সর্বোচ্চ আদালত ও পরবর্তী আপিল ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির বিচার করা হয়। মুজাহিদ জানান, আসামি ফারাহর এক বাসিন্দাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। এছাড়াও তার একটি মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য জিনিসপত্রও চুরি করে সে।

দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ড ‘কিসাস’ আইনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ রেখে দেওয়া হয়। এই আইনে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে একইভাবে শাস্তি দেওয়া হয় যেভাবে সে ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে হত্যা করেছিল।

মুজাহিদ দাবি করেন, শরিয়া দণ্ড কার্যকর করার সিদ্ধান্তটি ‘খুব সতর্কতার সাথে’ পরীক্ষা করা হয়েছে এবং পরিশেষে তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা মোল্লা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার মাধ্যমে তা অনুমোদিত হয়।

টিএম