কাতার বিশ্বকাপের ম্যাচে আর কয়েক ঘণ্টা পর উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কোর মুখোমুখি হবে ফ্রান্স। তার আগে রাজধানী প্যারিস ও ফ্রান্সের ভূমধ্যসাগরীয় কিছু অঞ্চলে ব্যাপক পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এসব এলাকায় মরক্কান বংশোদ্ভূত লাখ লাখ মানুষের বসবাস থাকায় বড় পর্দায় খেলা উপভোগ বা পার্টি করার সময় যাতে কোনও ধরনের সংঘাতের ঘটনা না ঘটে সেজন্য এই বাড়তি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

গত সপ্তাহে কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে পর্তুগালকে হারানোর পর মরক্কান সমর্থকদের বিজয় উদযাপনের সময় ফ্রান্সের কয়েকটি অঞ্চলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করে যে, শেষ পর্যন্ত দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েনের মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

বুধবার ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন ফ্রান্স২ টেলিভিশনকে বলেছেন, বিশ্বকাপের আগের মূল ম্যাচগুলোর তুলনায় সেমিফাইনালের ম্যাচ ঘিরে দেশজুড়ে প্রায় ১০ হাজার অতিরিক্ত পুলিশ কর্মকর্তা মোতায়েন করা হবে। তাদের মধ্যে ৫ হাজার পুলিশ কর্মীকে প্যারিসের পাশের ইলে-ডি-ফ্রান্স অঞ্চলে এবং প্রায় ২ হাজার ২০০ জনকে রাজধানীতে মোতায়েন করা হবে; যা আগের বিশ্বকাপের মূল ম্যাচগুলোর তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।

তিনি বলেন, ফরাসি সমর্থকদের মতো আমাদের মরক্কান বন্ধুরা পার্টির আয়োজন করতে পারবেন। তাদের পার্টি বন্ধ করে দেওয়া আমাদের কাজ নয়। কিন্তু ভালো নিরাপত্তা পরিবেশের মাঝে তা করতে হবে।

গত ১০ ডিসেম্বর মরক্কো পর্তুগালকে হারানোর পর প্যারিসে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল। মরক্কান সমর্থকরা নিজ দেশের পতাকা উড়িয়ে বিজয় উদযাপন করার সময় আক্রান্ত হয়। এ সময় কিছু দাঙ্গাকারী মরক্কান সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়; যা রাস্তায় সহিংসতায় রূপ নেয়। পরে প্যারিসের দাঙ্গা পুলিশ টিয়ারগ্যাস ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

মরক্কোর সাবেক ঔপনিবেশিক শাসক ফ্রান্স। ইউরোপের এই দেশটিতে ৭ লাখের বেশি মরক্কোর নাগরিক আছেন। মরক্কোর এই প্রবাসীদের বেশিরভাগই মূলত প্যারিস এবং ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাস করছেন। 

প্যারিসের বিখ্যাত চ্যাম্প এলিসি চত্বর দেশটিতে বিক্ষোভ কিংবা যেকোনও ধরনের জয় উদযাপনের অন্যতম এক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। ৭০ মিটার প্রশস্ত এই অ্যাভিনিউ বুধবার উন্মুক্ত থাকলেও আগামী রোববার বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচের দিন সন্ধ্যা থেকে বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডারমানিন।

প্যারিস পুলিশ বলেছে, নিরাপত্তা বাহিনী যেকোনও ধরনের ভাঙচুর ও আগ্রাসন ঠেকাতে চ্যাম্পস এলিসিসের দিকে বিশেষ নজর রাখবে।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস