ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ জেনারেল ভ্যালেরি জালুঝনি সম্প্রতি জানান, নতুন করে রাজধানী কিয়েভে হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া। তিনি আরও জানান, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি অথবা মার্চেই হতে পারে এ হামলা। এজন্য মস্কো প্রায় ২ লাখ সেনাকে প্রস্তুত করছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট পুতিনের নির্দেশের পর চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ঢুকে পড়ে রাশিয়ার সেনারা। তারা রাজধানী কিয়েভ দখলের চেষ্টা চালায়। কিন্তু ইউক্রেনের সেনাদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে এ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ ১০ মাস। এই সময়ের মধ্যে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে রুশ সেনারা।  

এখন যুদ্ধের ১০ মাস পর আবারও কিয়েভে স্থল আক্রমণ চালানোর মতো সক্ষমতা রাশিয়ার আছে কিনা এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এমন সন্দেহ প্রকাশ করেছেন খোদ রাশিয়ার সামরিক বিশেষজ্ঞরাই।

তাদের একজন আলেক্সান্ডার খামচিকিন। তিনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘আমার কাছে মনে হচ্ছে না নতুন অভিযান পরিচালনার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু আবার অসম্ভবও না।’

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বিশেষজ্ঞ মিখাইল কোফম্যানও বলেছেন, ‘কিয়েভে রাশিয়া আবারও হামলা চালাবে এমন চিত্র দেখার সম্ভাবনা নেই।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘তাদের (রুশ সেনাদের) অস্ত্র ও গোলাবারুদের সীমাবদ্ধতা আছে। তাদের কার্যক্রম এখন নির্ভর করছে কামানের পর্যাপ্ত গোলাবারুদ থাকার ওপর।’

যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জন কিরবি কিয়েভে রাশিয়ার সম্ভাব্য স্থল হামলার ব্যাপারে বলেছেন, ‘কিয়েভে এখনই কোনো হামলা হবে এমন কোনো ইঙ্গিত আমরা দেখছি না।’

এদিকে ফ্রান্সভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা মেডিটারেনিয়ান ফাউন্ডেশন ফর স্ট্রেটেজিক স্টাডিসের পরিচালক পাসকাল অজিউর বলেছেন, ‘ইউক্রেন আসলে অনেকটা ইচ্ছাকৃতভাবে রাশিয়ার হামলার কথা ছড়াচ্ছে। তারা পশ্চিমা দেশগুলোর ‘চিন্তা-ভাবনার’ মধ্যে থাকতে চাইছে। এরকম হামলা কথা বললে পশ্চিমারা তাদের দিকে নজর রাখবে।’

 

রাশিয়ার দয়া-মায়াহীন কমান্ডার সের্গেই সুরোভিকিন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনে কথিত বিশেষ সামরিক অভিযান পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছেন সোভিয়েত আমলের কমান্ডার সের্গেই সুরোভিকিনকে। তিনি যুদ্ধাঙ্গনে দয়া-মায়াহীন কমান্ডার হিসেবে পরিচিত।

ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনারা বিপর্যস্ত হওয়ার পর তার কাঁধে দায়িত্ব দেওয়া হয়। বর্তমানে রাশিয়ান সেনা কমান্ডারদের একত্রিত করা ও সেনাসদস্যদের চাঙ্গা করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পরবর্তী ভাগ্য নির্ধারণ হবে সুরোভিকিন যদি নিজ সেনাদের একত্রিত করায় সফলতা পান। তারা আরও জানিয়েছেন, বর্তমানে সুরোভিকিন যুদ্ধে সফলতা পাওয়ার ছক কষছেন।

সূত্র: আল জাজিরা

এমটিআই