সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ইসরায়েলে গঠিত হবে নতুন জোট সরকার। যা ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে ডানপন্থি এবং চরম আরববিদ্বেষী সরকার হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

সংবাদমাধ্যমটি বুধবার (২২ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নেতানিয়াহু ইসরায়েলের প্রেসিডেন্টকে অবহিত করেছেন অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে জোট গঠনে সমর্থ হয়েছেন তিনি। এরমাধ্যমে সরকার গঠনের সকল বাধা দূর হয়ে গেছে।

চলতি বছরের নভেম্বরে ইসরায়েলে নতুন সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে এককভাবে কোনো দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। তবে সর্বোচ্চ আসন পায় নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি। তাই সরকার গঠনে তিনি অন্য দলগুলোর সঙ্গে জোট বাধতে কাজ শুরু করেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হলেও ঐকমতে পৌঁছাতে পারছিলেন না তারা।

এরপর ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজোগ একটি সময় বেঁধে দেন। এই সময় শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে নেতানিয়াহু বুধবার মধ্যরাতে এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘আমি সরকার গঠনে সমর্থ হয়েছি।’

নেতানিয়াহুর সঙ্গে জোট বেধেছে উগ্রপন্থি ধর্মীয় দল জায়োনিজম পার্টি। দলটির সঙ্গে একটি চুক্তিও করেছেন নেতানিয়াহু। জায়োনিজম পার্টি নামের এ দলটির প্রধান হলেন বেজালেল স্মোরিচ। চুক্তি অনুযায়ী তাকে অধিকৃত পশ্চিম তীরের অত্যাধিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

নেতানিয়াহু এবং জায়োনিজম পার্টির বেজালেল স্মোরিচের মধ্যে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী বিচার ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনা হবে। এর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট দুর্বল হয়ে যেতে পারে।

আগামী বছর ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি ইসরায়েলে নতুন সরকার গঠিত হবে। নেতানিয়াহুর জোটে আরও চরমপন্থি দল রয়েছে। তাদের লক্ষ্য হলো বিচার ব্যবস্থা আরও দুর্বল করা এবং ফিলিস্তিনের দখলকৃত জমিগুলো সুরক্ষিত করা।

এছাড়া নেতানিয়াহুর সঙ্গে জোট বেধেছেন উগ্রপন্থি ইতামার বেন-জিভির। তিনি ইসরায়েলের পরবর্তী নিরাপত্তামন্ত্রী হবেন।

ইসরায়েলের সংসদে বুধবার একটি আইন পাস করা হয়। সেই আইন অনুযায়ী, ইতামার বেন-জিভিরের হাতে পুলিশের ওপর আরও কতৃত্ব স্থাপনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ইতামার বেন-জিভির উগ্র ইহুদি পাওয়ার পার্টির নেতা। এছাড়া তিনি আরববিদ্বেষী প্রয়াত ইহুদি ধর্মগুরু মের কাহানের শিষ্য ছিলেন।

ইসরায়েলের মানবাধিকার সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর সিভিল রাইটসের দেব্বি গিল্ড-হায়ো জানিয়েছেন, নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে গঠিত নতুন জোট সরকার ইসরায়েলের জন্য ‘বিপর্যয়’ ডেকে আনবে। এছাড়া নিরাপত্তামন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে যাওয়া উগ্রবাদী ইতামার বেন-জিভিরের কারণে ফিলিস্তিনে আরও অনেক মানুষ প্রাণ হারাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

এদিকে ইতামার বেন-জিভির আগে বলেছিলেন, যেসব ইসরাইলি আইন-কানুন মানেন না এবং অনুনগত তাদের যেন বের করে দেওয়া হয়। মূলত অনেক আরব এবং বেদুইন সম্প্রদায়ের মানুষের ইসরায়েলের নাগরিকত্ব আছে। সেসব আরব ও বেদুইনদেরই নির্দেশ করেছিলেন তিনি।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

এমটিআই