নতুন আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) এবং বৃহত্তর পারমাণবিক অস্ত্রাগার তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। মূলত মর্কিন নেতৃত্বাধীন দেশগুলোর হুমকি মোকাবিলায় এই আহ্বান জানান তিনি।

সাম্প্রতিক সময়ে প্রতিদ্বন্দ্বী দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে উত্তরের উত্তেজনা বেড়েছে এবং এর মধ্যেই কিম এই আহ্বান জানালেন। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে রোববার (১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন নেতৃত্বাধীন দেশগুলোর হুমকি মোকাবিলায় নতুন আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং বৃহত্তর পারমাণবিক অস্ত্রাগার তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন কিম জং উন। দেশটির ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির বৈঠকে কিম এই আহ্বান জানান।

একই বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষার জন্য ‘অপ্রতিরোধ্য সামরিক শক্তি’ নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন কিম।

অবশ্য সম্প্রতি উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে উত্তেজনা বেশ বেড়েছে। গত সপ্তাহে দক্ষিণের আকাশে উত্তর কোরিয়ার ড্রোনের অনুপ্রবেশ এবং আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ উত্তর কোরিয়ার সিরিজ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের জেরে সৃষ্ট আন্তঃসীমান্ত উত্তেজনার মধ্যে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হলো।

বৈঠকে কিম অভিযোগ করেন, পিয়ংইয়ংকে ‘বিচ্ছিন্ন এবং দমনের’ চেষ্টা করছে ওয়াশিংটন এবং সিউল। এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় একের পর এক মোতায়েন করা মার্কিন পরমাণু অস্ত্র ও সরঞ্জামকে ‘মানব ইতিহাসে নজিরবিহীন’ বলেও অভিহিত করেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ এই নেতা।

উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম দ্য কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানিয়েছে, দেশের পারমাণবিক শক্তিকে শক্তিশালী করার জন্য প্রণীত পরিকল্পনার অধীনে পৃথক আইসিবিএম সিস্টেম তৈরি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কিম। আইসিবিএম ক্ষেপণাস্ত্রের ‘প্রধান লক্ষ্য হবে দ্রুত পাল্টা পারমাণবিক হামলা চালানো’।

এতে আরও বলা হয়েছে, ‘বিরাজমান পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য প্রতিকূল শক্তির উদ্বেগজনক সামরিক পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় সামরিক পেশীকে অপ্রতিরোধ্যভাবে শক্তিশালী করার জন্য দ্বিগুণ প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বানও জানিয়েছেন কিম।’

কিম জং উন বলেন, ‘বিবেকহীন এবং বিপজ্জনক অস্ত্র তৈরির প্রতি ঝোঁক এবং শত্রুতাপূর্ণ সামরিক পদক্ষেপের’ কারণে দক্ষিণ কোরিয়া ‘নিঃসন্দেহে আমাদের শত্রু’ হয়ে উঠেছে।

২০২৩ সালের পারমাণবিক ও প্রতিরক্ষা কৌশলের প্রধান লক্ষ্যের বিষয়ে ইঙ্গিত করে কিম বলেন, ‘এতে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যাপক উৎপাদনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে এবং দেশের পারমাণবিক অস্ত্রাগারের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির আহ্বানও রয়েছে।’

টিএম