বেইজিংয়ের বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ফ্লাইট চেক ইন কাউন্টারে মাস্ক পরিহিত একজন ভ্রমণকারী। গত ২৯ ডিসেম্বরের ছবি

চীনে সম্প্রতি ব্যাপকভাবে বেড়েছে করোনার সংক্রমণ। এমনকি সংক্রমণের পাশাপাশি ঘটছে প্রাণহানির ঘটনাও। এই পরিস্থিতিতে চীন থেকে আসা যাত্রীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কো।

মূলত করোনাভাইরাস সংক্রমণের যেকোনও নতুন ঢেউ এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। রোববার (১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের যেকোনও নতুন ঢেউ এড়াতে আগামী ৩ জানুয়ারি থেকে চীন থেকে আসা যাত্রীদের ওপর মরক্কো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে বলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এক্ষেত্রে এসব যাত্রীদের জাতীয়তা বা নাগরিকত্ব যাই হোক না কেন চীন থেকে ভ্রমণের কারণে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন তারা।

অবশ্য কোভিড-১৯ ভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বেশ কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যেই চীন থেকে আসা যাত্রীদের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।

রয়টার্স বলছে, চীন থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক মরক্কোতে ভ্রমণ করে থাকেন। সাধারণত মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্য দিয়ে আসা বিভিন্ন ফ্লাইটে তারা উত্তর আফ্রিকার এই দেশটিতে ভ্রমণ করেন।

উল্লেখ্য, জিরো কোভিড নীতি বাতিলের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে করোনাভাইরাসের ভয়াবহ প্রাদুর্ভাবের মুখোমুখি হয়েছে চীন। প্রত্যেক দিন অসংখ্য মানুষ করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় দেশটিতে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে ব্যাপক শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এছাড়া করোনা সংক্রমণের লাগামহীন উত্থানে দেশটির হাসপাতালগুলোতে রোগীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। করোনার উত্থানের সাথে সাথে দেশটির মরদেহ পোড়ানোর জন্য নির্ধারিত শ্মশানেও প্রচণ্ড ভিড় শুরু হয়েছে।

কিন্তু কিছু আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার ফলে কোভিড ব্যাপক নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং সম্ভবত চীনে প্রতিদিন লাখ লাখ লোক এই ভাইরাসে সংক্রমিত হচ্ছেন।

ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে চীনা সরকারের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিসেম্বরের প্রথম ২০ দিনে প্রায় ২৫ কোটি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন; যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ১৮ শতাংশ। সেই হিসাবে দৈনিক সংক্রমণ গড়ে ১ কোটি ২২ লাখ।

এর আগে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে চীনে দৈনিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল ৪০ লাখ মানুষ। সেই সংখ্যাকেও এবার ছাড়িয়ে গেছে দেশটি। বর্তমানে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি করোনার সংক্রমণ এই দেশে। যা চীনকে করোনার চতুর্থ ঢেউ ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের ধারণা, দেশটিতে এবার করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সিচুয়ান প্রদেশ এবং রাজধানী বেজিংয়ের অর্ধেকেরও বেশি বাসিন্দা এতে সংক্রমিত হয়েছেন।

টিএম