আনুষ্ঠানিক নাম গঙ্গা বিলাস। বিলাসবহুল এই প্রমোদতরীতে থাকবে নদী-বিহারের ব্যবস্থা। শুরু হবে ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বারাণসী শহর থেকে। তারপর বিহারের পাটনা, পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা হয়ে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। এরপর ঢাকা থেকে আসামের ডিব্রুগড়ে গিয়ে শেষ হবে যাত্রা।

ভারত ও বাংলাদেশের ২৭টি নদী দিয়ে যাবে বিলাসবহুল নৌযান গঙ্গা বিলাস। পথে পড়বে বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান। পড়বে সুন্দরবনও কাজিরাঙার মতো বনভূমি। এ সবই দেখতে দেখতে চলবেন নৌযানের যাত্রীরা। আগামী ১৩ জানুয়ারি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উদ্বোধন করবেন এই বিলাসবহুল নদী-বিহার যাত্রার। এটাই হবে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ নদী-বিহার।

গঙ্গা বিলাস হলো একটি সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ। সফর পুরো শেষ করতে লাগবে ৫০ দিন। তবে একটানা সফর না করে কেউ তার নিজের পছন্দমতো ভাগেও সফর করতে পারবেন। তিন ভাগে সফর করা যাবে।

অত্যাধুনিক এই নৌযানে মোট ৮০ জন ভ্রমণ করতে পারবেন। ১৮টি বিলাসবহুল স্যুইট আছে। ডেক-এ প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। প্রতিটি পরিবার বা যাত্রীর জন্য আলাদা অ্যাটেনডেন্ট থাকবে।

এছাড়া বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করার জন্য একাধিক শেফ থাকবেন। প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কখনও আউল-বাউল, কখনও লোকগীতি, কখনও বা রাজস্থানি নাচ। কর্মকর্তাদের দাবি, এটা স্টেট অব আর্ট প্রযুক্তির নৌযান।

এর পাশাপাশি স্পা, জিম, ম্যাসাজ রুম থেকে শুরু করে অনেক সুযোগসুবিধা থাকবে এই প্রমোদতরীতে। প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার ফাঁকে ফাঁকে বই পড়ার সুযোগও থাকবে। থাকবে কনফারেন্স রুমও।

গঙ্গা বিলাসের যাত্রা শুরু হবে বারাণসী থেকে। সেখানে গঙ্গা আরতি দেখার পর চলতে শুরু করবে প্রমোদতরী। গাজিপুর, রামনগর, বক্সার হয়ে অষ্টম দিনে পৌঁছবে পাটনায়। ফারাক্কা ও মুর্শিদাবাদ হয়ে সুন্দরবন ঘুরে ২০তম দিনে পৌঁছবে কলকাতা। তার পরের দিনই তা বাংলাদেশের দিকে যাত্রা শুরু করবে।

বাংলাদেশে এক হাজার একশ কিলোমিটার নদীপথ পাড়ি দেবে এই প্রমোদতরী। সোনারগাঁও যাবে, ষাট গম্বুজ মসজিদ দেখানো হবে। ঢাকা ও টাঙ্গাইল ছাড়াও প্রমোদতরী যাবে বাগেরহাট, হাড়বাড়িয়া, কটকা, মোড়লগঞ্জ, বরিশাল, মেঘনাঘাট,  সিরাজগঞ্জ, বাহাদুরাবাদ, চিলমারি ও রংপুরে।

এরপর ধুবরি, গুয়াহাটি, তেজপুর হয়ে ডিব্রুগড়। সেখানেই যাত্রা শেষ।

খরচ কত লাগবে?

সূত্র জানাচ্ছে, ১২ হাজার ২৮০ মার্কিন ডলার থেকে প্যাকেজ শুরু হচ্ছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১২ লাখ ৮৩ হাজার ১৯৮ টাকা। এছাড়া স্যুইট নিলে তার জন্য অনেক বেশি অর্থ লাগবে।

এছাড়া দু’জন মিলে থাকলে জনপ্রতি ৩২ হাজার  ১৮০ মার্কিন ডলার লাগবে। বাংলাদেশি টাকার হিসাবে যা ৩৩ লাখ ৬২ হাজার ৬৪৯ টাকার মতো।  আর একা একটি স্যুইটে থাকলে ৫৪ হাজার ৬৫৫ মার্কিন ডলার বা ৫৭ লাখ ১১ হাজার ১৭৪ টাকা দিতে হবে।

এদিকে স্যুইটে যারা থাকবেন, তাদের জন্য বিশেষ খাবরের ব্যবস্থা থাকবে।

টিএম