ফাইল ছবি

কলকাতা ও ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেসে লুকিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় ভারতীয় এক যুবককে আটক করা হয়েছে। অভিযুক্ত ওই যুবক ট্রেনের একটি কোচের নিচে লুকিয়ে ছিলেন এবং এই অবস্থায় ১২০ কিলোমিটার ভ্রমণও করেন।

পরে তাকে দেখতে পেয়ে আটক করে ভারতীয় নিরাপত্তা কর্মীরা। রোববার (১৫ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলকাতা ও ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেসের একটি কোচের নিচে শুয়ে একজন যুবক বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করার সময় আটক হয়েছে। অভিযুক্ত ওই যুবক ট্রেনের একটি কোচের নিচে লুকিয়ে ১২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়। তবে ভারতীয় রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরপিএফ) কর্মীরা দেখতে পেয়ে অভিযুক্তকে আটক করে এবং এতে করে তার পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়ে যায়।

দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলছে, অভিযুক্ত ওই যুবকের নাম সুমন আলী এবং আটকের পর তাকে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অভিযুক্ত ওই যুবকের কোনও সন্ত্রাসী যোগসূত্র আছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোকে জানানো হয়েছে। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের নিরাপত্তা তল্লাশি নিয়েও।

সংবাদমাধ্যম বলছে, আটক হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত সুমন আলী জানিয়েছে- সে উত্তরপ্রদেশের মথুরার বাসিন্দা এবং শ্রীনগরের একটি স্ক্র্যাপের দোকানে কাজ করত। ভারতীয় রেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি কলকাতা থেকে সকাল সাড়ে ৬টায় ছেড়ে যায় এবং সকাল ৯টা ১১ মিনিটে নদীয়া জেলার গেদে স্টেশনে পৌঁছায়।

রেলের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘(কলকাতা থেকে গেদে পর্যন্ত) ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ যাত্রায় ট্রেনটি কোথাও থামার কথা নয়। ট্রেনটি বাংলাদেশে প্রবেশের আগে ভারতের দিকের শেষ প্ল্যাটফর্ম গেদে রেলওয়ে স্টেশনে দাঁড়ানোর পর এটির নিরাপত্তা পরীক্ষা করা হয়।’

তবে গেদে স্টেশনে নিরাপত্তা চেক করার সময় আরপিএফ কর্মীরা সুমন আলীকে একটি কোচের নিচে দেখতে পান। পরে তাকে রানাঘাটের একটি আদালতে পেশ করে তিন দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা আলীর কল রেকর্ডের বিবরণ পরীক্ষা করছেন। একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘এই ঘটনাটি রেলের নিরাপত্তার ত্রুটিকে প্রতিফলিত করছে।’

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল (পয়লা বৈশাখ) ঢাকা-কলকাতার মধ্যে যাত্রা শুরু করেছিল যাত্রীবাহী ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেস। সে সময় দু’দেশের সীমান্তবর্তী দর্শনা ও গেদে রেলস্টেশনে যাত্রীদের ইমিগ্রেশন-কাস্টমস করা হতো।

এরপর যাত্রীদের যাত্রাসময় কমানোর জন্য দু’দেশের রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর থেকে ইমিগ্রেশন-কাস্টমস সীমান্তবর্তী স্টেশন দর্শনা ও গেদের পরিবর্তে স্টার্টিং পয়েন্ট অর্থাৎ ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন ও কলকাতার চিতপুর স্টেশনে করা শুরু হয়।

তবে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে দুই বছরেরও বেশি সময় বন্ধ ছিল মৈত্রী এক্সপ্রেস। মহামারির প্রকোপ কমার পর গত বছরের ২৯ মে আবারও শুরু হয় বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে এই ট্রেন চলাচল।

টিএম