শক্তিশালী পোলট্রি খাতের দেশ মালয়েশিয়ায় রেকর্ড পরিমাণ ডিম রপ্তানি করছে ভারত। মালয়েশিয়ার কৃষি মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে শুক্রবার রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,প্রাথমিকভাবে মালয়েশিয়ায়  ৫ কোটি ডিম পাঠাচ্ছে দেশটি।

বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই আন্তর্জাতিক বাজারে ডিম রপ্তানি করছে ভারত। এতদিন পর্যন্ত এই ডিমের মূল ক্রেতা ছিল ওমান, কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ। এই প্রথম দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার কোনো দেশে ডিম রপ্তানি করছে ভারত।

সেটিও এমন একটি দেশ, যেটি পোলট্রি খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ; এবং সেই স্বয়ংসম্পূর্ণতার মাত্রা এতটাই যে সিঙ্গাপুরসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ তাদের ডিম ও মুরগির মাংসের চাহিদা মেটানোর জন্য এতদিন মালয়েশিয়ার ওপর নির্ভর করে আসছিল।

সেদিক থেকে দেশটিতে ভারতের ডিম রপ্তানির ঘটনা রীতিমতো বিস্ময়কর। মালয়েশিয়ার কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী সম্প্রতি ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর নাকাক্কাল জেলায় গিয়ে উদ্যোক্তা ও খামারিদের সঙ্গে মত বিনিময় করে এসেছেন। ভারতের যেসব অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ডিম ও মুরগির মাংস উৎপাদিত হয়, তামিলনাড়ুর নামাক্কাল সেসবের মধ্যে অন্যতম।

মালয়েশিয়ার ডিম ও পোলট্রিখাত স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও মুরগির খাবারের (পোলট্রিফিড) উপাদানগুলো বাইরের দেশ থেকে আমদানি করে দেশটি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বিশ্ববাজারে পোলট্রিফিডের বিভিন্ন উপাদানের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশটির অনেকে কৃষক ও খামারি ডিম ও মুরগি উৎপাদন স্থগিত রেখেছেন।

নামাক্কালের ডিম উৎপাদন ও বিপননের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান পন্নি ফার্মসের যুগ্ন ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাস্তি কুমার রয়টার্সকে বলেন, ‘ ভারত এই প্রথম মালয়েশিয়ায় ডিম রপ্তানি করছে এবং চলতি মাসেই ৫ কোটি ডিম সেখানে পাঠানো হবে। আমরা আশা করছি, চলতি ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসে এই রপ্তানির পরিমাণ আরও বাড়বে।’

আপাতত মালয়েশিয়ার সঙ্গে ৬ মাস মেয়াদী ডিম রপ্তানির চুক্তি হয়েছে উল্লেখ করে সাস্তি কুমার জানান, ইতোমধ্যেই চুক্তির দেড় কোটি ডিম পাঠানো হয়ে গেছে। আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চ নাগাদ বাকি ডিমও পাঠানো হবে।

এদিকে, মালয়েশিয়ার পোলট্রি খাতে সংকট চললেও তা ৬ মাসের বেশি স্থায়ী হবে না বলে মনে করছেন দেশটির উদ্যোক্তা ও খামারিরা। দেশটির খামারিদের সংগঠন ফেডারেশন অব লাইভস্টক ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ত্যান চি হি রয়টার্সকে বলেন, ‘সরকার ইতোমধ্যে গবাদি পশু ও পোলট্রি খাতে ভর্তুকির পরিমাণ বাড়িয়েছে। আশা করছি আগামী ছয় মাসের মধ্যেই ঘুরে দাঁড়াবে দেশের পোলট্রি খাত।’

এসএমডব্লিউ