সহপাঠীকে মেঝেতে ফেলে তিন ছাত্রীর মারধর, ভিডিও ভাইরাল
পাকিস্তানের লাহোরের অভিজাত একটি প্রাইভেট স্কুলে সহপাঠীদের হাতে এক ছাত্রীর নির্যাতনের শিকার হওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এই ভিডিও অনলাইনে ভাইরাল হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনায় পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা পুলিশ ওই স্কুলের চার ছাত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছে বলে শনিবার দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে।
টুইটারে অসংখ্যবার শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা যায়, ওই স্কুলের তিন ছাত্রী তাদের এক সহপাঠীকে চুল ধরে মেঝেতে ফেলে মারধর করেছে। এ সময় ওই ছাত্রীকে বিভিন্ন ধরনের গালাগালি ও মাফ চাওয়ার নির্দেশ দেয় তারা। পাশাপাশি তাকে চড়-থাপ্পড় মারতেও দেখা যায়।
বিজ্ঞাপন
ভিডিওতে দেখা যায়, এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীর কপালে লাথি মারে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা অন্য এক ছাত্রী। আর এই দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করে তাদেরই আরেক সহপাঠী। তবে সহপাঠীকে মারধরের সময় তাদের সবাইকে বেশ হাসি-খুশি ও ঠাট্টা করতে দেখা যায়। এমনকি ওই ছাত্রীর বুকে চেপে বসা এক ছাত্রী নিজের মোবাইল বের করে ছবিও তোলেন।
— Maheen Faisal (@MaheenFaisal20) January 20, 2023
দেশটির রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাপের (পিটিআই) সদস্য মাহিন ফয়সাল টুইটারে ভিডিওটি শেয়ার করেছেন। ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, এটা দেখে একেবারেই বিরক্ত হয়েছি। লাহোরের স্কারসডেল আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের দৃশ্য এটি; যেখানে শিক্ষার্থীরা মদ্যপানে অস্বীকৃতি জানানোয় এক সহপাঠীকে লাঞ্ছিত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এটি অগ্রহণযোগ্য। আমি আশা করি মেয়েদের বিরুদ্ধে গুরুতর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বিজ্ঞাপন
পাকিস্তানের দৈনিক ডনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৬ জানুয়ারি ডিফেন্স হাউজিং অথরিটির (ডিএইচএ) বিবি ব্লকে অবস্থিত আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে ওই ঘটনা ঘটেছে।
এই ভিডিও ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পর লাহোরের ক্যাপিটাল সিটি পুলিশ বলেছে, ছাত্রীদের মারামারির এই ঘটনায় একটি মামলা দায়ের এবং ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
দেশটির আরেক সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নির্যাতনের শিকার ছাত্রীর বাবা ইমরান ইউনুসের অভিযোগের ভিত্তিতে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে। মেয়ে মাদক সেবনে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে তার তিন সহপাঠী তাকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
এফআইআরে ওই ছাত্রীর বাবা দাবি করেছেন, মেয়েদের মধ্যে একজন বক্সার ছিল। আর সেই বক্সারই তার মেয়ের মুখে আঘাত করেছে এবং অন্য একজন লাথি মেরেছে। যার ফলে তার মুখে জখম হয়েছে। নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর তার মেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। এখন ভাইরাল ভিডিওটি তার এবং পরিবারের জন্য মানসিক নির্যাতনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মেয়ের ওপর হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে ইমরান ইউনুস বলেন, এই ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন একজন মাদকাসক্ত। আমার মেয়েকে স্কুলে একটি মাদক নিতে বলেছিল সে। আমার মেয়ে তা নিতে অস্বীকার করায় তাকে নির্যাতন করা হয়েছে।
সূত্র: ডন, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
এসএস