টানা ১১ মাস ধরে ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন চালাচ্ছে রাশিয়া। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলকে কেন্দ্র করে লড়াই আবর্তিত হলেও বিভিন্ন সময় রাজধানী কিয়েভেও আঘাত হানছে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র।

এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে গেছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। রোববার (২২ জানুয়ারি) তিনি সেখানে সফর করেন। এমনকি ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্বাগত জানানোর আগেই কিয়েভের উপকণ্ঠেও ঘুরে আসেন জনসন।

রোববার রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির আমন্ত্রণে ইউক্রেন সফরে গেছেন বলে জানিয়েছেন ব্রিটেনের কনজারভেটিভ এই এমপি। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটিতে জনসনের অঘোষিত সফরটি এমন সময়ে অনুষ্ঠিত হলো যখন যুক্তরাজ্যে সাবেক এই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত আর্থিক বিষয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।

অভিযোগ রয়েছে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বরিস জনসনকে ঋণের নিশ্চয়তা সুরক্ষিত করতে সহায়তা করেছিলেন বিবিসির চেয়ারম্যান রিচার্ড শার্প। কারণ শার্প সরকারের মাধ্যমে তার বিবিসির দায়িত্বে নিযুক্ত হয়েছিলেন।

তবে ইউক্রেন সফরের সময় জনসন এই অভিযোগের বিষয়ে কোনও কথা বলেননি। রোববার কিয়েভে পৌঁছানোর পর প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এবং অন্যান্য ইউক্রেনীয় মন্ত্রী তাকে অভ্যর্থনা জানান।

টেলিগ্রামে জেলেনস্কি লিখেছেন, ‘আমি ইউক্রেনের সত্যিকারের বন্ধু বরিস জনসনকে কিয়েভে স্বাগত জানাই। আপনার সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ!’

সফরে কিয়েভের উত্তর-পশ্চিমে বুচা ও বোরোদ্যাঙ্কা শহরও পরিদর্শন করেন বরিস জনসন। এই দু’টি শহর গত বছরের মার্চ মাসে রাশিয়ান বাহিনী দখলে নিয়েছিল।

রাশিয়ান সৈন্যদের প্রত্যাহারের পর বুচার রাস্তায় ছড়িয়ে থাকা বেসামরিক লোকদের মৃতদেহসহ দু’টি শহরে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের দৃশ্য সামনে আসে। সেখানে জনসন বলেন, ‘ইউক্রেনের জনগণের দুর্ভোগ অনেক দিন ধরে চলছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই যুদ্ধ শেষ করার একমাত্র উপায় হলো ইউক্রেনের জয়লাভ করা এবং যত দ্রুত সম্ভব জয়ী হওয়া। এখন সময় হচ্ছে ইউক্রেনীয়দের কাজ শেষ করার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত সরঞ্জাম দেওয়া এবং প্রয়োজনে সহায়তা দ্বিগুণ করা।’

জনসনের ভাষায়, ‘পুতিন যত তাড়াতাড়ি ব্যর্থ হবেন, ইউক্রেন এবং সমগ্র বিশ্বের জন্য ততই মঙ্গল।’

যুক্তরাজ্যের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক পূর্বসূরী জনসনের কিয়েভ সফরকে ‘সমর্থন’ করছেন বলে জানা গেছে। সুনাকের প্রেস সচিব বলেছেন, ‘সকল সহকর্মীর প্রতি সবসময় সুনাকের সমর্থন এটিই বোঝায় যে, যুক্তরাজ্য ইউক্রেনের পেছনে রয়েছে এবং তাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।’

অবশ্য বরিস জনসন প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন এবং ডাউনিং স্ট্রিট ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে ইউক্রেনে বেশ কয়েক দফায় সফর করেছেন। মাত্র কয়েকদিন আগে তিনি ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে ইউক্রেনের ওপর একটি প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন।

সেখানে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে অংশ নিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিও।

টিএম