ভারতের যোশিমঠের একাধিক জায়গায় ধস নামছে। এবার বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে চিন্তা বাড়াচ্ছে হিমালয়ের কোলে অবস্থিত একাধিক পর্যটন কেন্দ্র। উত্তরাখণ্ডের একাধিক শৈলশহরেই রাস্তা ও বাড়িতে ফাটল দেখা দিচ্ছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, হাইড্রোপাওয়ার প্রজেক্টের জেরেই ফাটল ধরেছে একাধিক এলাকায়। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জানুয়ারি মাস থেকে কর্ণপ্রয়াগ, উত্তরকাশী, গুপ্তকাশী, ঋষিকেশ, নৈনিতাল ও মুসৌরিসহ একাধিক জায়গায় ফাটল ধরছে বলে জানা গেছে।

যোশিমঠ থেকে মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরে কর্ণপ্রয়াগ। সারাবছর ধরে পুণ্যার্থীরা যেন চার ধাম যাত্রায় যোগ দিতে পারেন, তার জন্য ঋষিকেশ ও কর্ণপ্রয়াগের মধ্যে রেলপথ চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু এ প্রকল্পের ফলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, যোশিমঠের মতোই বেহাল দশা হবে এই অঞ্চলগুলোরও। ইতোমধ্যেই বহুগুণা নগরের বদ্রীনাথ হাইওয়ে সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ২৪টি বাড়িতে ফাটল ধরেছে বলে জানা গিয়েছে।

ঋষিকেশ এলাকার ৮৫টি বাড়িতে ফাটল ধরেছে। স্থানীয়দের দাবি, রেলপথ তৈরির কাজের জন্যই ক্রমশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাদের বসতবাড়ি। এমনকি চাষের জমিও বসে যাচ্ছে। গাড়ওয়াল এলাকাতেও চার ধামের রাস্তা তৈরির কারণে বেশ কিছু বাড়ি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। মুসৌরির শতাব্দীপ্রাচীন ল্যান্ডোর বাজারেও ধস নামতে পারে, সেই সঙ্গে একাধিক বাড়িতে বড়সড় ফাটল ধরেছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০০জন ব্যক্তির প্রাণ হাতে নিয়ে বসবাস করেছেন বলে অনুমান স্থানীয়দের।

কেন ভয়াবহ পরিণতির সামনে দাঁড়িয়ে উত্তরাখণ্ডের একাধিক এলাকা? বিশেষজ্ঞদের মতে, যথাযথ পরিকল্পনা না করেই একের পর এক নির্মাণ হয়ে চলেছে। সেই কারণেই জনবসতি বাড়ছে এই এলাকায়। তাছাড়াও পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে। সব মিলিয়ে চাপ পড়ছে পাহাড়ের ওপর। 

পদ্মভূষণজয়ী পরিবেশবিদ অনিল জোশি বলেন, এই এলাকার দিকে একেবারে নজর দেয় না প্রশাসন। যোশিমঠের অবস্থা দেখে আমি অন্তত একেবারেই অবাক নই। ১৯৭৬ সাল থেকে এই বিষয়টি সবার নজরে এলেও কেউ গুরুত্ব দেয়নি। আগামী দিনে যেন এই সমস্যা বাড়তে না পারে, তাই এখনই উপযুক্ত পদক্ষেপ করা দরকার।

প্রশাসনের একাধিক প্রকল্পের জেরেই বিপদের মধ্যে গোটা উত্তরাখণ্ড। এ পরিস্থিতিতে প্রশাসনের ভূমিকার দিকে তাকিয়ে স্থানীয় জনতা।

কেএ