পাকিস্তানে অতি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বোমা হামলার পর সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সর্বদলীয় ঐক্যমঞ্চ (অল পার্টি কনফারেন্স- এপিসি) গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ; বিরোধী নেতা ইমরান খান ও তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফকে (পিটিআই) সেই মঞ্চে আসার আমন্ত্রণও জানিয়েছেন তিনি।

কিন্তু ইমরান খান এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। পিটিআইয়ের সেক্রেটারি জেনারেল আসাদ ওমর শুক্রবার পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিইও টিভিকে নিশ্চিত করেছেন এ তথ্য। আসাদ ওমর জানিয়েছেন, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি পেশোয়ারে যে সর্বদলীয় সম্মেলন ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী— সেখানে যাবেন না পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান।

ডলারের মজুত তলানিতে নেমে যাওয়ায় গত এক বছর ধরে ব্যাপক অর্থনৈতিক চাপের মধ্যে আছে পাকিস্তান; দিন দিন সেই চাপ আরও বাড়ছে। অর্থনীতির এই সংকট অবস্থার জেরে দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতিও টালমাটাল।

এর মধ্যেই গত ৩১ জানুয়ারি, সোমবার দেশটির উত্তরপশ্চিামাঞ্চলীয় প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ারের সুরক্ষিত এলাকা (রেড জোন) বলে পরিচিত পুলিশ লাইন্সের একটি মসজিদে ভয়াবহ আত্মঘাতী বোমা হামলা ঘটে। এতে নিহত হয়েছেন প্রায় ১০০ জন এবং তাদের প্রায় সবাই পেশোয়ার পুলিশ বাহিনীর সদস্য।

আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবানগোষ্ঠীর পাকিস্তান শাখা তেহরিক-ই তালেবান (টিটিপি) ইতোমধ্যে হামলার দায় স্বীকার করেছে।

সোমবারের সেই ঘটনা কার্যত পাকিস্তানকে হতবিহ্বল করে দিয়েছে। গত কয়েক দশকের মধ্যে এত বড়মাত্রার হামলা দেখেনি পাকিস্তান।

বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে পিটিআই চেয়ারম্যানকে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। ওই দিন পেশোয়ারে আয়োজিত এক সভায় ইমরান খানের নাম উল্লেখ না করে শেহবাজ শরিফ বলেন, ‘সব দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ব্যতীত সন্ত্রাসবাদ নির্মূল সম্ভব নয়। এ ইস্যুতে আমরা সবাই একযোগে কাজ করতে চাই।’

‘আমি সবাইকে এই এপিসিতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, এমন কি যে মানুষটি আমার সঙ্গে হাত মেলাতেও আগ্রহী নন— তাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’

এদিকে শুক্রবার আসাদ ওমর জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার পিটিআইয়ের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করায় তারা প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণ গ্রহণ করতে পারছেন না।

লাহোর হাইকোর্টের প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে জিও টিভিকে পিটিআইয়ের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘তারা আমাদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেছে এবং এক্ষেত্রে সংবিধানের কোনো তোয়াক্কা তারা করেনি। সরকারের পুলিশ বাহিনী আমাদের চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারের জন্য মুখিয়ে আছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা কীভাবে তাদের সঙ্গে ঐক্যে যেতে পারি?’

এসএমডব্লিউ