শ্রদ্ধাকে খুনের পর চিকেন রোল অর্ডার করেন আফতাব
ভারতের দিল্লির আলোচিত শ্রদ্ধা ওয়ালকার হত্যাকাণ্ডে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। আর এই চার্জশিটে উঠে এসেছে খুনের নৃশংস বিবরণ।
৬ হাজার ৬০০ পাতার চার্জশিটে পুলিশ তুলে ধরেছে কিভাবে লিভ ইন সঙ্গী শ্রদ্ধাকে খুন করেছিলেন প্রেমিক আফতাব আমিন পুনাওয়ালা।
বিজ্ঞাপন
২০২২ সালের ১৮ মে শ্রদ্ধাকে খুন করেন তার প্রেমিক আফতাব। তবে এই হত্যাকাণ্ডের খবর প্রকাশ্যে আসে গত বছরের নভেম্বরে। শ্রদ্ধার নামে নিখোঁজ ডায়েরি করেন তার বাবা বিকাশ ওয়ালকার। এরপর ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ বুঝতে পারে খুন হয়েছেন শ্রদ্ধা, চরম নৃশংসভাবে তাকে খুন করা হয়েছে। শ্রদ্ধাকে খুনের পর তার দেহ ৩৫ টুকরো করেন আফতাব। ১২ নভেম্বর গ্রেপ্তার করা হয় আফতাবকে।
চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, শ্রদ্ধাকে জাপটে ধরে প্রথমে মেঝেতে ফেলে দেন আফতাব। শ্রদ্ধার বুকের উপর চড়ে বসেন তিনি। তার পর দু’হাত দিয়ে শ্রদ্ধার গলা চেপে ধরেন। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর শ্রদ্ধার দেহ শৌচাগারে লুকিয়ে রাখেন আফতাব।
বিজ্ঞাপন
পুলিশকে আফতাব জানিয়েছেন, শ্রদ্ধাকে খুনের পর সন্ধ্যায় কাছাকাছি একটি দোকানে যান। সেখান থেকে ১টি করাত, ৩টি ব্লেড, ১টি হাতুড়ি এবং প্লাস্টিকের ক্লিপ কেনেন। এরপর বাড়ি ফিরে প্রথমে করাত দিয়ে শ্রদ্ধার হাত কাটেন আফতাব। তার পর সেই দেহাংশ সাদা পলিথিনের মধ্যে ভরে রাখেন। পরের রাতে উরু কেটে ফেলে দিয়ে আসেন জঙ্গলে।
এর ৪-৫ দিন পর শ্রদ্ধার দেহের ১৭টি টুকরো করেন আফতাব। যার মধ্যে ছিল হাতের ৬ টুকরো, পায়ের ৬ টুকরো, মাথা, ধড়, কোমরের ২টি টুকরো, বুড়ো আঙুল। দিল্লি পুলিশকে আফতাব জানিয়েছেন, খুনের পরের দিন একটি ফ্রিজ কেনেন আফতাব। শ্রদ্ধার বাকি দেহাংশগুলো ওই ফ্রিজে রাখেন।
শ্রদ্ধাকে খুনের পর একটি ডেটিং সাইটে অন্য এক নারীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন আফতাব। ওই নারী আফতাবের ফ্ল্যাটেও আসেন কয়েকবার। যখনই ওই নারী আসতেন সেই সময় ফ্রিজ পরিষ্কার করে রাখতেন আফতাব। সেই সঙ্গে শ্রদ্ধার দেহাংশ রান্নাঘরে লুকিয়ে রাখতেন। খুনের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য শ্রদ্ধার হাড়গোড় মিক্সার গ্রাইন্ডারে গুঁড়ো গুঁড়োও করেছিলেন আফতাব।
তাকে যাতে কেউ সন্দেহ না করে সে জন্যও বুদ্ধি এঁটেছিলেন আফতাব। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, শ্রদ্ধার নিখোঁজের তদন্তে যোগ দিতে মহারাষ্ট্রও গিয়েছিলেন আফতাব। পথে শ্রদ্ধার ফোন ছুড়ে দেন। পাশাপাশি শ্রদ্ধার ক্রেডিট কার্ড নষ্ট করে দেন।
শ্রদ্ধাকে যেদিন খুন করেন আফতাব, সেদিন অনলাইনে চিকেন রোল অর্ডার করেছিলেন। খুনের পর সেই চিকেন রোল খেয়েছিলেন তিনি। খুনের পর শ্রদ্ধার দেহ টুকরো টুকরো করায় রক্তে ভেসে গিয়েছিল ফ্ল্যাট। সেই রক্ত পরিষ্কার করতে ২ বোতল হারপিক কিনেছিলেন আফতাব। পাশাপাশি হ্যান্ডওয়াশ, ২ বোতল গ্লাস ক্লিনারও কেনেন তিনি।
খুনের কারণ হিসেবে চার্জশিট বলা হয়েছে, শ্রদ্ধা ও আফতাবের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। আর এই অশান্তির নেপথ্যে ছিলেন আফতাবই। একাধিক নারীসঙ্গ ছিল আফতাবের; যা মোটেই ভালো চোখে দেখেননি শ্রদ্ধা। এ নিয়েই সমস্যা শুরু দু’জনের।
এনএফ