রাশিয়ার কারাবন্দী বিরোধী রাজনৈতিক নেতা অ্যালেক্সি নাভালনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনে মস্কোর সামরিক পরাজয় অনিবার্য। এমনকি ক্রেমলিন যদি পশ্চিমাপন্থী এই দেশটিতে আরও সৈন্য পাঠায়, তারপরও পতন ঠেকাতে পারবে না।’

৪৬ বছর বয়সী রাশিয়ার এই রাজনীতিক অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ৯ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। তবে ক্রেমলিনকে চ্যালেঞ্জ করায় তাকে এই সাজা দেওয়া হয়েছে বলে নাভালনির সমর্থকরা মনে করেন।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের প্রথম বার্ষিকীর আগে সোমবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে নাভালনি বলেছেন, ইউক্রেনকে তার নিজের ভাগ্য নির্ধারণ করতে হবে। একই সঙ্গে ১৯৯১ সালের সীমান্তের প্রতি রাশিয়ার শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা উচিত।

বিবৃতিতে নাভালনি বলেছেন, ‘হাজার হাজার রুশ সৈন্যের জীবন নির্দয়ভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।’

তিনি বলেছেন, ‘চূড়ান্ত সামরিক পরাজয় কেবল হাজার হাজার অতিরিক্ত রক্ষকদের জীবনের বিনিময়ে বিলম্বিত হতে পারে। তবে সামগ্রিকভাবে এই পরাজয় একেবারে অনিবার্য।’

নাভালনি জোর দিয়ে বলেছেন, ‘চলমান যুদ্ধে হাজার হাজার নিরীহ ইউক্রেনীয় নিহত হয়েছেন। কারণ ৭০ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘যেকোনও মূল্যে’ ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকতে চান।

তিনি বলেন, রাশিয়ার উচিত ইউক্রেনের ১৯৯১ সালের সীমান্তকে সম্মান করা; যার মধ্যে ক্রিমিয়াও অন্তর্ভুক্ত আছে। রাশিয়ার এই বিরোধী নেতা বলেন, ‘এখানে আলোচনা করার কিছু নেই। একুশ শতকে এসে যুদ্ধের মাধ্যমে সীমান্ত পরিবর্তন করা যায় না।’

‘আমাদের ইউরোপের অংশ হওয়া এবং ইউরোপীয় উন্নয়নের পথ অনুসরণ করা উচিত।’

রাশিয়ার সর্বোচ্চ এই বিরোধী রাজনীতিক বলেছেন, ‘ইউক্রেনকে একা ছেড়ে দেওয়া’ এবং যুদ্ধ শেষ হয়ে গেলে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির ক্ষতি করার দায়ে মস্কোর অর্থ প্রদান করা উচিত।

তিনি বলেন, রাশিয়ায় সংসদীয় প্রজাতন্ত্র প্রয়োজন। পুতিনের ‘একনায়কত্ব’ গুঁড়িয়ে দেওয়া এবং অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা দরকার।

২০২০ সালে সাবেক সোভিয়েত আমলের বিষাক্ত নার্ভ এজেন্ট নোভিচক প্রয়োগ করা হয়েছিল নাভালনিকে। জার্মানিতে এই নার্ভ এজেন্টের হামলার শিকার হয়ে অল্পের জন্য বেঁচে যান তিনি। আর এই হামলার জন্য পুতিনকে দায়ী করেন তিনি।

পরে জার্মানিতে চিকিৎসা নিয়ে গত বছরের জানুয়ারিতে রাশিয়ায় ফেরেন নাভালনি। ওই মস্কো বিমানবন্দরে অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন থেকেই কারাগারে বন্দী রয়েছেন রাশিয়ার এই বিরোধী নেতা।

সূত্র: এএফপি।

এসএস