আন্তর্জাতিক বাজারে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতেও কমেছে খাদ্যপণ্যের দাম। এ নিয়ে টানা ১১ মাস বিশ্বব্যাপী খাদ্য দ্রব্যের দাম কমেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)।

শুক্রবার (৩ মার্চ) এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে, মার্চে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের দাম আশঙ্কাজনকহারে বেড়ে যায়। কিন্তু সেখান থেকে পরিস্থিতি এখন অনেক ভালো হয়েছে। ওই সময় বিশ্ব মূল্য সূচক যা ছিল, সেটি ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে এসে ১৯ শতাংশ কমেছে।

এফওএ-এর বিশ্ব মূল্য সূচক, বিশ্বব্যাপী যেসব পণ্য সবচেয়ে বেশি ক্রয়-বিক্রয় হয় সেগুলোর তথ্য রাখে। তাদের হিসাব অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে গড়ে বিশ্ব মূল্য সূচক ছিল ১২৯ দশমিক ৮ পয়েন্ট। জানুয়ারিতে যা ছিল ১৩০ দশমিক ৬ পয়েন্ট।

এফওএ জানিয়েছে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের পর এটি সবচেয়ে কম পয়েন্ট।

সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানিয়েছে, এই সূচকে ভেজিটেবল তেল এবং দুগ্ধজাত পণ্যের দাম কমার বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে। তবে এ সময়ে চিনির দাম বেড়েছে। কিন্তু চিনির দাম বাড়লেও ওই দুই পণ্যের দাম কমার বিষয়টি গড় মূল্যে প্রভাব রেখেছে।

এছাড়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির তুলনায় ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে মূল্য সূচক ০ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে। আটার তুলনায় চালের দাম কম থাকায় এই সূচকটি কমেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে ভেজিটেবল তেলের দাম কমেছে ৩ দশমিক ২ শতাংশ, দুগ্ধজাত পণ্যের দাম কমেছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ। কিন্তু চিনির দাম বেড়েছে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ। গত ছয় বছরের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। মূলত ভারতে চিনির উৎপাদন ও রপ্তানির বিষয়টি চিনির মূল্যের ওপর প্রভাব রেখেছে।  

কমবে গম উৎপাদন

জাতিসংঘের বিশ্ব মূল্য সূচক ২০২৩ সালের গম উৎপাদন পূর্বাভাসে বলেছে, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে গমের উৎপাদন কমবে ৭৮৪ মিলিয়ন টন। তবে তা সত্ত্বেও বিশ্বে এ বছর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গম উৎপাদনের রেকর্ড হবে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ গম উৎপাদনকারী দেশ ইউক্রেনের কৃষি অবকাঠামো ও ফসলের মাঠ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবং অর্থনৈতিক বাধা-বিপত্তির কারণে অতি প্রয়োজনীয় এ পণ্যের উৎপাদন কমবে। বিশেষ করে ইউক্রেনের শীতপ্রধান অঞ্চলগুলোতে গম উৎপাদন ৪০ শতাংশ হ্রাস পাবে।

তবে এবার আশা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে ৫১ মিলিয়ন টন গম উৎপাদিত হবে। যার মাধ্যমে ক্ষতি হয়ত কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া যাবে। ২০১৫ সাল থেকেই মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্বব্যাপী গমের উৎপাদন বেড়েছে।

সূত্র: রয়টার্স

এমটিআই